গত ১৭ জানুয়ারি একটি অনলাইন দৈনিকে নববর্ষ উপলক্ষ্যে সামিয়া রহমানের একটি লেখা প্রকাশিত হয়। সেখানে যথারীতি আল্লাহ, ধর্মীয় শিক্ষাব্যবস্থা, ইসলামী রাজনীতি ও মুসলিম বিশ্ব নিয়ে কৌতুক করা হয়। তারপর পাঠকদের প্রতি সেগুলোকে সিরিয়াসলি না নিতে আহবান করা হয়। জবাবে অনলাইনে জনপ্রিয় ফেসবুক পেজ বাঁশেরকেল্লা একটি জবাবী লেখা প্রকাশ করে। ফেসবুকে তুমুল আলোচিত লেখাটি জাস্টনাউবিডি২৪ এর পাঠকদের জন্য প্রকাশ করা হল।
হলুদ সাংবাদিকতা করিতে করিতে যখন তাহারা টিআরপি সংকটে ভূগিতেছেন, তখন সাংবাদিকতা ছাড়িয়া হঠাৎ করিয়াই ভাঁড়ামি শুরু করিলেন। ইনিয়ে বিনিয়ে শুনাইতে মনস্থ করিলেন কিছু কৌতুক। আদর করিয়া যাহাকে ওনারা জোকস বলিয়া থাকেন। দলান্ধ সাংবাদিকতা আর চেতনার রমরমা ব্যবসায় ভাটি লক্ষ্য করিয়া পুরাতন বোতলে নতুন লেবেল লাগাইয়া পুরাতন মদই বিক্রি করিবার এই উদ্যোগ কতখানি সফল হইবে তাহা খুব সহজেই অনুমেয়। তথাপি মন্দা ব্যবসায় চাঙ্গা করিতে নতুন উদ্যোগ নিতে কে না চায়?
পুরাতন কে চাঙ্গা করিবার কথা বলিতেই একখানি গল্প মনে পড়িয়া গেল। একদা জনৈক পুরোহিত অনেক পথ সফর করিয়া ক্লান্ত দেহে গঞ্জের এক রেস্তোরায় গিয়া পৌঁছিলেন। উদ্দেশ্য দু’মুঠো ডাল-ভাত দিয়া দুপুরের আহার সারিবেন। রেস্তোরার কর্মচারীর দেয়া ডাল-ভাতের লোকমা মুখে তুলিতেই পুরোহিত বুঝিতে পারিলেন যে, ডাল বাঁসি হইয়াছে। তিনি কর্মচারীকে জিজ্ঞাসা করিলেন “তো বাবু! এই ডালের বয়স কতদিন?” উত্তরে কর্মচারী বলিলেন “রেস্তোরার বয়স যতদিন, ডালের বয়সও ততদিন। আমি কদাচিত ডালের কড়াই উনুন হইতে নামাইতে দেখি নাই”
চেতনা ব্যবসার যে কড়াই মিডিয়ার চুলায় চড়ানো হইয়াছে তাহা কবে নাগাদ নামানো হইবে আল্লাহ মালুম। হয়তো ভাবিতেছেন কেন এমন বলিলাম?
মাত্র কয়েকদিন আগে ব্রাহ্মনবাড়িয়ায় একজন হাফেজে কুরআনকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে চেতনাযোদ্ধারা। নীপিড়নের শিকার হইয়া সামান্য গর্জন ছাড়ে হাফেজ মাসুদের সহপাঠি ও কয়েক বছর যাবত চেতনাপিষ্ট এলাকার জনগণ। তাহাতে নাকি অবৈধ সরকারের ৭০ কোটি টাকার সমপরিমান ক্ষতি সাধিত হইয়াছে। আর তারচেয়েও বড় আঘাত নাকি লাগিয়াছে চেতনার তবলায়। যাহাতে সামিয়া ম্যাডামের ঘুম হারাম হইয়াছে। প্রশ্ন হইল, চেতনায় উজ্জিবীত হইয়া যখন সোনার ছেলেরা এমসি কলেজের ঐতিহ্যবাহী হোস্টেল পোড়াইয়া ছাই করিয়াছিল, তখন কি চেতনার কলমের কালি শুকাইয়া গিয়াছিল? যখন সোনার ছেলেরা মাদ্রাসার নিরীহ ছাত্রকে গুলি করিয়া হত্যা করিয়াছিল, কোথায় ছিল তখন চেতনা? যখন দিন দুপুরে সোনার ছেলেরা কোপাকুপির অনুশীলন চালায় কোথায় থাকে এই ভাঁড়ামি?
ম্যাডামের কৌতুকের ডালি দেখিয়া আরও একটা গল্প বলিতে ইচ্ছা করিতেছে। একদা এক দোকানদার দূরে কোথাও যাইবার পূর্বে তাহার দোকানের কর্মচারী ছেলেটিকে বলিল - আমি গঞ্জে যাইতেছি, দোকান ঠিকঠাক চালাইবা। খরিদদারকে ফিরাইয়া দিবানা। একটা না থাকলে অনুরূপ অন্য একটা কিছু ধরাইয়া দিবা। যেমন পঁচা সাবান না থাকলে কেউ যদি চায় বলবা বল সাবান নেন, লাক্স না থাকলে লাইফবয় দিবা।এইভাবে বুঝাইয়া দোকান মালিক নিজ কাজে চলিয়া গেল। ছেলেটা বেচাকেনা করিতে লাগিল। এক ব্যক্তি আসিয়া বলিল এই ছোকড়া, টিস্যু পেপার আছে? ছেলেটি বলিল টিস্যুপেপার নাই তবে শিরিষ কাগজ আছে চলবে?
যখন পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলায় একজন হাফেজ নিহত হওয়ার খবর প্রচার করার কথা, তখন নিদ্রা গমন করিয়া হঠাৎ জাগিয়া তাহারা বিক্ষুদ্ধ মানুষের কতিপয় ভাঙচুরের ক্ষতিতে বিলাপ শুরু করিলেন। বিক্ষুদ্ধ মাদরাসা ছাত্র ও প্রাচীন ঐতিহ্যের মাঝখানে এক দা-কুমড়া সম্পর্কের অস্তিত্ব আবিষ্কার করিয়া মাদরাসার ছাত্র নিহত হওয়ার খবরের তুলনায় ঐতিহ্যের ক্ষতিতে যাহারা অপেক্ষাকৃত বেশি ব্যথিত হইয়া ক্ষোভে দুঃখে যাহারা কৌতুকের ডালি নিয়া বসিলেন। তাহাদের কৌতুক যে টিস্যুপেপারের বদলে শিরিষ কাগজ বিতরনের প্রচেষ্টা তাহা সহজেই বুঝা যায়।
মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রান বিসর্জনকারী শহীদের সংখ্যা আসলে কত তাহা প্রশ্ন করিলে ওনারা বিব্রতবোধ করিয়া থাকেন। কিন্তু সঠিক সংখ্যা জানিবার অধিকার তো এদেশের জনগণের রহিয়াছে। কিন্তু কোন অদৃশ্য কারণে তাহারা সঠিক তথ্য চাইলে চেতনার ডালার তলে উট পাখির মত মস্তক লুকাইবার চেষ্টা করেন। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলিবার চেষ্টা করেন যে, যাহা বাহান্ন তাহাই তেপ্পান্ন। কিন্তু তাহাতে কি আর লাখের হিসেব পূরণ হয়?
ব্রাহ্মন যেমন তাহার ঝুলিতে রাখা ধর্মগ্রন্থকে নিচু শ্রেণির শুদ্রদের থেকে আড়ালে রাখিতে চান, তেমনিভাবে চেতনা ব্যবসায়ীরা মানুষ সত্য জানিয়া ফেলিবে এই ভয়ে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মের নিকট হইতে আড়ালে রাখিতে চান। প্রমাণ করিতে চান ইহা লইয়া প্রশ্ন করিলে জাত যাইবে। অধর্ম হইবে। দেশ রসাতলে যাইবে। ফলশ্রুতিতে গঙ্গাস্নান আবশ্যক হইয়া পড়িবে।
কথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার লইয়া ‘কিন্তু’, ‘তবে’, ‘যদি’ বলিয়া তাহাদের বিব্রত করা যাইবে না। অপরাধ থাকুক কিংবা না থাকুক, তাহারা যাহাকে অপরাধী বলিবে, বিনা বাক্যব্যয়ে তাহাদের ফাঁসির আঞ্জাম করিতে হইবে। অন্যথায় তাহাদের পাকিদের দালাল ও নব্য রাজাকার সাব্যস্ত করিয়া তাহাদেরও বিচারের মুখোমুখি করা হইবে। শাহবাগের গঞ্জিকা চত্বরে তাহাদেরও ফাঁসি কার্যকর করা হইবে।
সামিয়া ম্যাডামদের এই ভাঁড়ামি দেখিতে দেখিতে এপারের জনগণ বেশ ক্লান্ত হইয়া পড়িয়াছে। ভালো হয় যদি তাহারা ওপারের জি বাংলার মীরাক্কেলে নাম লেখান। তাহাতে দাদাবাবুদের মনোরঞ্জনও হইবে। আবার এদেশের জনগণও শ্বাস ছাড়িবার সুযোগ পাইবে। চনমনে শীতে কষ্টে থাকা জনগণ নিয়ে আর প্রহসন সহ্য হয় না যে...
-জাস্টনাউবিডি২৪
নাস্তিক গুলো বেশি বেড়ে যাচ্ছে।
ReplyDeleteনাস্তিক ও ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী আদর্শের পতাকায় শামিল হোন।
ReplyDeleteএগুলা কোন মহিলাই না। সব পতিতার গুষ্ঠি পতিতা।
ReplyDeleteওদের চক্রান্ত চলতেই থাকবে.... ইসলামের দাওয়াত দিতেই থাকবো।
ReplyDelete