শিরোনাম

Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks

Apr 5, 2016

"বাঁশখালি কোন ঘটনাই না!"

কল্পণা মুখার্জির বোধকল্প

সামরিক ক্ষেত্রে 'শ্যুট এন্ড আউট' বলে একটা কথা আছে। এই কমান্ড হল, শান্ত মাথায় স্বীদ্ধান্ত নিয়ে গণহারে মানুষ মেরে ফেলে দেয়ার হুকুম। যুদ্ধ ক্ষেত্রে নিরস্ত্র জনতা কিংবা তুলনামূলক দূর্বল প্রতিপক্ষের ওপর গণহারে গুলি চালাতে এই শব্দ ব্যবহার করা হয়।


বাঁশখালীর গন্ডামারা ইউনিয়নে চোখ বন্ধ করে গুলি ছোঁড়া হয়েছে। মানুষের গায়ে এত গুলি যে দেখে বিশ্বাস হবে না, এই নাগরিকেরা নিজ এলাকায় নিহত হয়েছেন। এমন নৃশংস ব্রাশ ফায়ারের ঘটনা শুধু মাত্র ভারতীয় সীমান্তেই দেখা যায়। অথচ গতকাল যারা মারা গেলো প্রায় অর্ধ শত মানুষ! তারা নিজ এলাকায় ছিলেন, নিজেদের ভূমি দখল করায় প্রতিবাদ করছিলেন। আর তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা গ্রুপ গঠন করেছিলো স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা। 

এই হল ফযাক্ট। "শুধু মাত্র সরকারী দলের কতিপয় নেতার অভিলাশ চরিতার্থ করতেই পুলিশের গুলি"- এমনটি ভাববার কোন কারন নাই। এই সরকারের অধীনে গোটা দেশই এখন বানিজ্যের পণ্য হয়ে গেছে। পুলিশের নেমপলেটে ওয়ালটনের স্থানীয় ডিলার সাহেবের মোবাইল নাম্বার এখনও আসেনি, তবে থানাগুলো দেখলে কোম্পানির শো রুম হয়ে গেছে। অন্যদিকে স্থানীয় দূর্বৃত্বের সমন্বয়ে চলছে জনতা নিয়ন্ত্রণ। ফলে স্থানীয় নেতাদের অংশ থাকবেই।

বাঁশখালির গন্ডামারাকে প্রায় ছয় শত একর জমি দখল করে ব্যবসায়িক বিদ্যুত কেন্দ্র বানাতে চায় এস আলম গ্রুপ। দেশের শেয়ার হোল্ডার তো বটে! বিশাল এক ব্যবসায়িক গ্রুপ। একতা দেশের প্রধানমন্ত্রী সে দেশের শেয়ার হোল্ডারদের কথা ফেলবেন কেন? 

ব্যবসায়িদের মাথা চড়া থাকে। ব্যবসার বিরুদ্ধে বিশৃংখলা সৈহ্য করা যায় না। গন্ডামারা ইউনিয়ন দখল হলে সমস্যা কোথায়? দরিদ্র মানুষ অন্য কোথাও যাবে! গ্রামের বাড়ি। এমনিতেই তো বেড়ার ঘর। এই ঘর অন্যত্র সরিয়ে ফেললে এমন কী হয়? দেশের শেয়ার যাদের, তাঁরা ব্যবসা করবেন না? 

তাই তো, পুলিশ নিশ্চিন্তে ব্রাশ ফায়ার করেছে। একটি স্বাধীন দেশে শ্যুট এন্ড আউট করা হয়েছে নীরিহ জনতাকে। স্থানীয়রা গুনে এসে বলছেন নিহতের সংখ্যা ৪২ জন! আরো অনেককেই পাওয়া যাচ্ছে না। এদের লাশ গুলো পুলিশ তুলে নিয়ে গুম করে দিয়েছে। সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহ করছেন চুড়ান্ত অনীহা নিয়ে। হাউজে বাঁশখালির ঘটনার কোন তথ্যের মূল্য নাই। ফলে এত ঝুকি আর যন্ত্রনার মানে কোথায়? শুধু মোহাম্মদ আলীর পরিবারেই ৪ জন নিহত! হাউজ গুলো সর্বোচ্চ মোহাম্মদ আলী পর্যন্ত গিয়েছে! সকাল থেকে রাত অবধি কত মোহাম্মদ আলীর পরিবারকে নিস্ব করা হল, তার ইয়ত্তা কোথায়?

দেশের নাগরিক সমাজ এই নিয়ে সরব হবেন না- জানিয়ে দিয়েছেন প্রথম দিনই। তাদের অনীহা দেখে পান-চুন নিয়ে রাষ্ট্র বিরোধী আন্দোলন করার শাহবাগও নেতিয়ে আছে!

সব মিলিয়ে একটাই কথা বলার আছে। বাংলাদেশ এক স্বৈরাচারিনীর দখল ক্ষেত্র। এখানে পুলিশ হল বাংলাদেশ ব্যবসায়িক সমিতির দারোয়ান। বৈদেশিক উপদেষ্টা ইন্ডিয়া। আর দেশীয় ভূমি দস্যুরা এর ইনভেস্টর। 

জনগণ বলে কিছু নেই। মাঝে মাঝে ছোট ছোট প্রোডাক্টের ক্রেতা। প্রায়ই ব্যবসায়িক পণ্য। তার চেয়ে বড় পরিচয়, তারা ভবঘুরে। বিশাল কারখানার জন্য নির্ধারিত ভূমির অব্যবহৃত অংশের আনাচে কানাচে বিভিন্ন স্থানে সাময়িক বসবাস করছে। এদের আবাসের যেমন কোন নিশ্চয়তা নেই, তেমনি মান-সম্মান কিংবা মূল্যেরও কোন নিশ্চয়তা নেই। ভোটার নয়, তাই তেল মালিশের দরকারও নেই। ডাইরেক্ট শ্যুট এন্ড আউট! গণতান্ত্রিক দেশের ভোট এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে হচ্ছে। টি-২০ ভোট পদ্ধতি ঝামেলা বিহীন। তাই মালিকানা নির্ধারনের ক্ষমতাও এখন এইসব ভবঘুরের হাতে নাই।

তবে মিডিয়ার বাইরে জনগণ এভাবে চিল্লাফাল্লা করতেই থাকলে, যেকোন দিন যেকোন প্রভাবশালী মন্ত্রী কিংবা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীই বলে বসবেন- "বাঁশখালী কোন ঘটনাই না, ২০ কোটির মাঝে দু-চারশো মারা যেতেই পারে। এটা কমার্শিয়ালি কোন ফ্যাক্ট হতে পারেনা।" 









-জাস্টনাউবিডি২৪

3 comments:

  1. আর কত??? আর কত??

    ReplyDelete
  2. আসলেই মনে হয় বাশখালীর হত্যাযজ্ঞ কিছুই না!

    ReplyDelete
  3. স্বৈরাচারের কবলে আমরা দিনে দিনে অসহায় হয়ে যাচ্ছি!

    ReplyDelete