শিরোনাম

Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks

Jul 4, 2016

শতাধিক তরুন 'দেশের বাইরে' চলে গেছেঃ সেনা পাঠাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র!

এক্সক্লুসিভ, জাস্টনাউবিডি২৪

গুলশান ট্রাজেডির খলনায়ক জঙ্গি তরুনদের মত একই ভাবে শতাধিক উচ্চবিত্ত পরিবার থেকে হারিয়ে গেছেন তারা! এদের সবাই রাজশানীর বিভিন্ন ইংলিশ মিডিয়াম কিংবা নামী-দামী প্রাইভেট ভার্সিটি পড়ুয়া তরুন।

গোয়েন্দাদের ধারণা এদের অধিকাংশই ঢুকে পড়েছে জঙ্গি কার্যক্রমে। তিনটি গোয়েন্দা সংস্থা এই হারিয়ে যাওয়া তরুনদের খোঁজে মাঠে নেমেছে। কিন্তু কিভাবে এই ছেলেরা জঙ্গি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হলো, কিভাবে তারা বিপদগামী হলো, তার উত্তর মিলছে না। গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মতে এই নিখোঁজ সন্তানরা জঙ্গি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত বলে তাদের কাছে তথ্য-প্রমাণ রয়েছে।

তাদের পিতা-মাতা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ উচ্চপদে চাকরিরত কিংবা অবসরপ্রাপ্ত। এদের কারো কারো পিতা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা এবং তাদের কেউ কেউ অবসরে রয়েছেন। গুলশানে নিহত নিব্রাস ইসলামের এক চাচা উপ-সচিব, আরেক চাচা পুলিশের কর্মকর্তা এবং অপর চাচা একজন বিজ্ঞানী।

গতকাল রবিবার পুলিশ সদরদপ্তরের আইজি একেএম শহীদুল হকের সভাপতিত্বে শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগীয় প্রধান এবং রেঞ্জের ডিআইজিগণ উপস্থিত ছিলেন। জঙ্গি দমনে সক্রিয়ভাবে দেশব্যাপী কার্যক্রম নতুনভাবে আরো জোরালো করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিগত দিনে উচ্চবিত্ত পরিবারের বিপুল সংখ্যক তরুণ স্বেচ্ছায় নিখোঁজ হয়েছেন। তাদের অনুসন্ধান করে তারা কে কোথায় কি কাজে জড়িত তার প্রোফাইল তৈরীর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

র্যাবের পক্ষ থেকেও জানা যায়, ইতপূর্বে উচ্চবিত্ত পরিবারের ১০ শিক্ষিত তরুণ স্বেচ্ছায় নিখোজ হয়। তাদের অনুসন্ধান চালিয়ে সন্ধান মিলেনি। তাদের জঙ্গি কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ারও তথ্য প্রমাণ পেয়েছে র্যাব। র্যাবের ইন্টিলিজেন্স উইংয়ের পরিচালক লে. কর্ণেল আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, নিখোজ তরুণদের অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে। তাদের মধ্যে ইংলিশ মিডিয়াম, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রয়েছেন।

এরাই এখন নীরিহ মানুষ মারছে?

গুলশান রেস্টুরেন্টে হামলায় নিহত ছয় জঙ্গি রোহান ইমতিয়াজ, নিব্রাস ইসলাম, মীর সাবিহ মোবাশ্বের ও তাসিন রওনক আন্দালিবসহ তারা ৭/৮ মাস আগে স্বেচ্ছায় নিখোঁজ হন। দুটি শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা গত দেড় বছরে উচ্চবিত্ত পরিবারের শতাধিক তরুণ স্বেচ্ছায় নিখোঁজ হয় । কেউ কেউ তাদের পিতামাতাকে এসএমএস বা টেলিফোনে বলেছে যে আমার আশা আর কর না। তোমাদের সাথে পরকালে দেখা হবে।

নিখোঁজ সন্তানদের জন্য ব্যাকুল পিতামাতা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বলেন, বাবা তুমি ফিরে আস। উত্তরে সন্তান জানিয়ে দেয়, আমি যেই রাস্তায় এসেছি এখান থেকে ফেরার কোন সুযোগ নেই। আমার জন্য তোমরা সকলে বেহেশতে যাবে। তবে নিখোঁজ আট তরুণের পিতা-মাতা এবং অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা দুই হাত জোড় করে বলেন আমার নাম এবং ছেলের নাম প্রকাশ করবেন না। আমরা জীবিত থেকেও এখন মৃত।

দুটি গোয়েন্দা সংস্থা এই নিখোঁজ তরুণদের অনুসন্ধান করতে গিয়ে তথ্য প্রমাণ পায় যে গুলশান এলাকার তিনটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরার এক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ও বিদেশি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের সংখ্যাই বেশি।

এই নিখোঁজদের অধিকাংশই হিযবুত তাহরীর সংগঠনের সঙ্গে জড়িত।

জঙ্গি সংগঠনের মধ্যে হিযবুত তাহরীর সদস্যরা সুশিক্ষিত এবং টেকনোলজিতে দেশ-বিদেশে উচ্চ ডিগ্রীধারী। এই সংগঠনের নেতারা ফেসবুকের মাধ্যমে কিংবা নানা কৌশলে মেধাবী এই তরুণ ছাত্রদেরকে ভেড়াতে সক্ষম হন।

তাদেরকে বিদেশে নিয়ে জঙ্গি হামলারও প্রশিক্ষণ দিয়ে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। গোয়েন্দাদের তদন্তে এই তথ্য বেরিয়ে আসে।

পুলিশের আইজি একেএম শহীদুল হক বলেন, নিখোজ তরুণদের অনুসন্ধানে একাধিক সংস্থা মাঠে কাজ করছে। এছাড়াও জঙ্গি তত্পরতা রোধে দেশব্যাপী জোরালে কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। নিয়মিত পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে।” -(ইত্তেফাক)


এদিকে বাংলাদেশী ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি খবর দিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে জঙ্গি হামলায় ব্যাকপ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশে সেনা পাঠাতে আগ্রহী আমেরিকা। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র জন কার্বি তার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে সেনা পাঠানোর প্রস্তাব দেন।

তিনি বলেনে, ‘বাংলাদেশ সরকারের সাথে আমরা যোগাযোগ রাখছি। যারা এই ঘটনার জন্য দায়ী তাদেরকে বিচারের আওতায় আনার জন্য এবং সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস উগ্রবাদ দমনে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছি। প্রয়োজনে আমরা সৈন্য পাঠাতেও রাজি আছি।’

এদিকে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোও তাদের ফেসবুক পেজে জঙ্গি খবর গুরুত্ব দিয়ে শেয়ার করছে। সেখানে ব্যাপক সংখ্যক উগ্রবাদী মন্তব্য বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের নজরে পড়েছে। অনেক ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশ নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করতে দেখা যাচ্ছে।

বাংলাদেশকে ‘সিরিয়ার ভাগ্য বরনের প্রস্তুতি নিয়ে নিতে’ বলছেন তারা! এবিপি আনন্দ নামের একটি ভারতীয় গণমাধ্যম তদের ফেসবুক পেজে জঙ্গি হামলার খবর প্রচার করলে সেখানেও এমনতর মন্তব্য আসতে দেখা যায়

এদিকে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যাওয়া তরুনদের অবস্থান নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে নানা জল্পনা কল্পনা! গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন গুলশান কান্ডে যুক্ত তরুনদের আগে থেকেই খুঁজছেন তারা। বেশ কয়েক মাস থেকেই এই তরুনদেরকে জঙ্গি হিসেবে নিশ্চিত করেছিলো প্রশাসন।

কিন্তু ‘দেশের বাইরে’ চলে যাওয়ায় এদের আর ধরা সম্ভব হয়নি। জাস্টনাউবিডির বিশেষ টিম এ দিকটির অনুসন্ধা্নে নেমে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর ক্লু পেয়েছে। একটি সূত্র মতে, বাংলাদেশের সরকারী দল আওয়ামীলীগের ঢাকা মহানগর নেতা ইমতিয়াজ খান বাবুলের ছেলেটি নিখোঁজ হয়েছিলেন ভারতের মাটিতেই।

প্রায় ছয় মাস আগে ইমজিয়াত তার স্ত্রীকে নিয়ে ভারতে আসেন চিকিৎসার জন্য। এখান থেকেই রোহান লাপাত্তা হয়ে যান। তখন দেশে ফিরে জিডি করেন ইমতিয়াজ। যেখানে ছেলের হারিয়ে যাওয়া নিয়ে বিস্তারিত তথ্য নথিভুক্ত করেন এই আওয়ামীলীগ নেতা। ইতিমধ্যে সহযোগী গণমাধ্যম কলকাতা ২৪ এই তথ্য যোগে এক রিপোর্ট প্রকাশ করে

ইমতিয়াজের বাবুলের মত ঐ সমসাময়িকেই অন্যান্য জঙ্গিদের বাবা-মাও তাদের নিখোঁজ ছেলের সন্ধান চেয়ে ঢাকার বিভিন্ন থানায় জিডি করেন। আর এসব ক্ষেত্রে পুলিশ অনুসন্ধান করে তাদের জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পেলেও ‘দেশের বাইরে’ চলে যাওয়ায় আর নাগাল পাননি। ফলে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ শিবির এবং এই সঙ্ঘবদ্ধ সন্ত্রাসীদের মূল ঠিকানা বাংলাদেশে নয় বলেই নিশ্চিত হওয়া গেছে।

পুলিশের এক বিশেষ টিম জাস্টনাউবিডিকে জানিয়েছে তাদের অতীত অভিজ্ঞতার কথা। এর আগেও জেএমবির মূল প্রশিক্ষণ আসত ভারত থেকে। সহজেই সীমানার ওপারে চলে যাওয়ার কারনে একদিকে তাদের আটক করা যেত না, অন্যদিকে যেকোন সময় হামলার উদ্দেশ্য নিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়তো তারা। রোহান ও অন্যান্য ৪ জঙ্গির সূত্র ধরে বিশেষ ঐ দেশের কথা মাথায় রেখেই সামনে এগুচ্ছেন গোয়েন্দারা।

পার্শ্ববর্তী দেশ হওয়ায় একদিকে সহজেই জঙ্গিরা সীমানা পার হয়ে লাপাত্তা হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে নির্বিঘ্নে প্রশিক্ষণ ও ফটোসেশন করে ফিরে যাচ্ছে বাংলাদেশে। অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহ করে খুব সহজেই হামলা করছে বাংলাদেশে।

বাংলাদেশের একজন নিরাপত্তা বিশ্লেষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাস্টনাউবিডিকে বলছিলেন, ‘বাংলাদেশের অধিকাংশ জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ ভারত ভিত্তিক। পার্শ্ববর্তী দেশকে অস্থিতিশীল করে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে এসব ক্ষেত্রে ভারতের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ভূমিকা অসম্ভব এবং নজিরবিহীন নয়।’


এখন, বাংলাদেশে চলমান জঙ্গিবাদী কার্যক্রমের যেকোন পর্যায়ে ভারতীয় সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হলে উপমহাদেশীয় জঙ্গি উত্থান নিয়ে পুরো দৃশ্যপটেই ব্যাপক পরিবর্তন চলে আসবে। জঙ্গি বিরোধী কৌশল ও জঙ্গি দমনেও যুক্ত হবে সম্পূর্ণ ভিন্ন মাত্রা।

-জাস্টনাউবিডি২৪

2 comments:

  1. May Allah Save our beloved motherland

    ReplyDelete