শিরোনাম

Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks

Jan 24, 2016

এবার তারানা হালিমের দাবি 'ফেসবুক তথ্য দিয়েছে', মিশ্র প্রতিক্রিয়া অনলাইনে!

সামাজিক মাধ্যম প্রতিনিধি,
জাস্টনাউবিডি২৪

ফের উদ্বেগ জনপ্রিয় ফেসবুক নিয়ে। সরকারের ডাক ও টেলি যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম দাবি করলেন 'তিনজনের তথ্য দিয়েছে ফেসবুক'। 

সম্প্রতি মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর সফরের পর দেশে ফিরে এ তথ্য জানালেন তিনি। এর আগে ফেসবুকের দক্ষীন এশীয় প্রতিনিধি দলের সাথে নজির বিহীন এক বৈঠকের আয়োজন করে বাংলাদেশ সরকার। 


সেসময় ফেসবুকের দক্ষীন এশীয় আঞ্চলিক প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠকে বাংলাদেশ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তিনজন মন্ত্রী ছাড়াও গোয়েন্দা ও স্বশস্ত্র বাহিনী প্রধানগণ উপস্থিত হন।
অবশ্য বাংলাদেশ সরকারের আবেদনে ফেসবুককে সাড়া দিতে আগ্রহী দেখা যায়নি সেসময়। উপরন্তু বাংলাদেশের তরুন প্রজন্মের পক্ষে সরকার বিরোধী একটি অনলাইন পিটিশন পৌঁছে দেয় এক পিটিশন সংস্থা। বাংলাদেশ সরকারের সাথে বৈঠকের পরই গত ২০ ডিসেম্বর ফেসবুক অফিসিয়ালি ঘোষণা করে যে, এখন থেকে কোন সরকার কোন তাদের কোন ইউজারের আইডিতে গোয়েন্দাগীরির চেষ্টা করলে তারা একাউন্টধারীকে সেটা জানিয়ে দেবে। মূলত সেসময় বাংলাদেশ সরকারের তরফে প্রচার করা হয়, 'সরকার একটি বিশেষ প্রযুক্তি আমদানী করেছে। ফলে তার মাধ্যমে তারা যেকারো আইডিতে প্রবেশ করতে স্বক্ষম হবেন।'

মিসেস হালিম জানান, তিনি সিঙ্গাপুরে ফেসবুকের এশীয়া কার্যালয়ে গত ১২ জানুয়ারী বৈঠক করেন। সেখানে তাকে ‘বিভিন্ন ভাবে’ সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেয় ফেসবুক।  

এরপর মালয়েশিয়া ভ্রমন শেষে দেশের আসার পর তিনি জানতে পারেন, তিনটি একাউন্টের তথ্য সরকারকে দেয়া হয়েছে।

তিনি জানান, বাংলাদেশে ফেসবুকের সাথে বৈঠকের পর গত ডিসেম্বরে ২ টি আইডির তথ্য চাওয়া হলেও তখন তারা তা দেয়নি। 

তার দাবি মতে, এখন ‘৩ টি আইডির তথ্য পাবার পর’ তিনি মনে করছেন যে, 'ফেসবুক সরকারের ডাকে সাড়া দিচ্ছে'।

সরকারের হাতে ফেসবুকের তথ্য দেয়ার মিসেস হালিমের এ বক্তব্য কতটুকু বিশ্বাস করছেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা? এ প্রশ্নের উত্তর জানতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, মিশ্র প্রতিক্রিয়ার প্রকাশ ঘটেছে সেখানে।

রাহুল খন্দকার নামে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী এই প্রতিবেদককে জানাচ্ছিলেন তার মতামত।

‘এর আগেও কয়েকবার বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছেন তারানা আপা। একবার তিনি বলেছিলেন বিকল্প পথে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের আইডি হ্যাক করা হবে। পরে তিনিই বলেছিলেন, সরকার চাইলে যেকারো আইডিতে প্রবেশ করতে পারবে। এসবই আসলে কম অভিজ্ঞদেরকে ভয় দেখানোর চেষ্টা!’ -বলছিলেন জনাব রাহুল।

খালেদ হাসান নামের একজন ব্যবহারকারী জানাচ্ছেন, ‘ফেসবুক সত্যিই আতংকের বিষয় হয়ে গেছে। বর্তমান পরিবেশে প্রায় সব তরুনই সরকারের কাজে নানাভাবে অসন্তুষ্ট। 

ফেসবুক নিয়ে সরকার যা করেছে তার বিরোধীতা করলেও সরকারে মারাত্মক আইনে সে অপরাধী। সেক্ষেত্রে কোন ভাবে ফেসবুক যদি তথ্য দেয় তাহলে সেটা সাধারন তরুনদের জন্য বিপদ হতে পারে।’

ঢাবির ছাত্রী রোখসানা পারভিন জানাচ্ছিলেন, 'ফেসবুক যদি সরকার বিরোধীতার কারনে কারো তথ্য দিয়েই থাকে, তাহলে ব্যবসায়িক দিক থেকে সে ভুল করবে। 

কারন, তখন বাংলাদেশে এমনিতেই ফেসবুক বন্ধ হয়ে যাবে। সরকারের অগণতান্ত্রিক আচরনে গোটা দেশই ক্ষুব্ধ। 

সেখানে ফেসবুকে সরকারের সমালোচনা বন্ধ হলে এখানে আসার আগ্রহ হারাবে তরুনরাও। পাশাপাশি অমানবিক ৫৭ ধারার ভয় নিয়ে কেউ অনলাইনে আসতে চাইবে না।'

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে প্রায় মাসখানেক ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বন্ধ রাখার পর তরুনদের ক্ষোভের মুখে সরকার সেগুলো খুলে দেয়। 

এরই মাঝে ঐ মাধ্যমগুলোর কর্তৃপক্ষের সাথে দর কষাকষিতে লিপ্ত হয় দেশটির সরকার। 

এর আগেও ফেসবুকসহ যোগাযোগ মাধ্যমগুলো পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সরকারের অনুরোধ অগ্রাহ্য করে তাদের ব্যবহারকারীদের তথ্য প্রদান থেকে বিরত থেকেছে। যেখানে আমেরিকার মত প্রভাবশালী দেশও রয়েছে। 

জানা গেছে, নিতান্তই অপরাধ প্রমাণ হলে, তারা অপরাধীদের তথ্য শেয়ার করে থাকে। প্রতি ৬ মাসে এ সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে ফেসবুক। 

বিগত সময় ‘গভমেন্ট রিকুয়েস্ট রিপোর্ট’ নামে পরিচিত এই রিপোর্ট অনুসারে বাংলাদেশ সরকারের চাহিদার কোন তথ্যই প্রদান করেনি ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।

ফলে তারানা হালিমের দাবিকে ঠিক বিশ্বাস করতে পারছেন না ফেসবুকবোদ্ধা বাংলাদেশী তরুণগণ। পূর্ব অভিজ্ঞতায় তারা এখানে নিছক ভীতি প্রদর্শনই দেখতে পাচ্ছেন।

-জাস্টনাউবিডি২৪ (কপিরাইট)

2 comments: