জাস্টনাউবিডি২৪
'আন্তর্জাতিক মানবতা বিরোধী অপরাধ ট্রাইবুনাল' কী চমৎকার নাম! যুদ্ধাপরাধীর বিচারের অঙ্গীকার করে ক্ষমতা লাভের পর, অপরাধের বিচার প্রশ্নে আরোও ব্যাপকতর সংযোজন প্রশংসার দাবি রাখে বটে। এখন শুধু যুদ্ধাপরাধ নয়, সকল মানবতা বিরোধী অপরাধ গন্য হবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক মানদন্ড? যথার্থ বিচার? ন্যায় প্রতীষ্ঠা? এই উপাদান গুলো একে একে ভূলুন্ঠিত হয়ে বিচার বিস্তৃতির উল্টোযাত্রায় এখন অবিচারের বিস্তৃতি পরিগ্রহ করেছে। বিখ্যাত পিজি হাসপাতালে বহু কাল থেকে মানুষ আসে দুদন্ড সস্থি লাভের আশায়, জীবন প্রাপ্তির আশায়। সেই পিজি হাসপাতালের গা ঘেঁষে ডাক্তারি ছেড়ে দেয়া প্রধান জল্লাদ তার বাহিনী নিয়ে অনবরত মৃত্যুর বন্দনা করছেন। পুজো দিচ্ছেন, নৃত্য তুলছেন, ভয়ংকর সব সুর ছড়িয়ে দিচ্ছেন বাতাসে! বাংলাদেশের মিডিয়া সেই অন্ধকার জগতে মন্ত্র পড়ছে, অর্চনা করে আসছে। মন্দিরে মানববলির স্থান যেভাবে পুরোহিতের মনে আতংকের বদলে পাশবিক প্রশান্তি জাগায়, বাংলাদেশের মিডিয়া কর্মীদের মনে মৃত্যুর উল্লাস পাশবিক ধ্বনি তোলে। সেই উল্লাস দেশের শতভাগ মানুষের বক্তব্য ঢেকে দিয়ে আত্মভগবান প্রচারে উদ্বুদ্ধ করে।
মিথ্যা প্রবঞ্চনা। নষ্ট উদ্দীপনা- ঘীরে ধরেছে জীবনবিরুদ্ধ শক্তিকে। সেই উদ্দীপনা দিনের পর দিন সকল যুক্তিকে দলিত করে মৃত্যুর আয়োজন করে যাচ্ছে। একের পর আরেক! এখন রক্তবাহী একেকটি শরিরকে ঝুলিয়ে দিলে পুজারিদের অশান্ত আত্মা মুহুর্ত সময়ের জন্য শান্ত হয়ে যায়। এরপর শুরু হয় আরেকটি বলির আয়োজন! -সমাপ্তি কোথায়?
আদিম আয়োজনের বলিদেহ যে আধুনিক সময় বড্ড অপ্রতুল হয়ে গেছে! যুদ্ধাপরাধের বিচার থেকে আন্তর্জাতিক মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার, সেখান থেকে 'আন্তর্জাতিক' কর্তন করে দেশীয় প্রযুক্তির ডোমেস্টিক আদালতের বিচার...- সেই অপ্রতুলতার স্বীকৃতি। একটি মিথ্যা প্রতীষ্ঠায় গোয়েবলসের অতৃপ্ত আত্মার উপস্থিতিতে দশজন মিথ্যাবাদী নিয়ে সেফহোমের গুমোট অন্ধকার প্রতীষ্ঠা করা হয়। সেই নেশামত্ত্ব লোভীদের ধরে এনে বিচারালয়ের শপথ গুলোকে হত্যা করে মাসের পর মাস একটা মিথ্যা প্রতীষ্ঠায় ব্যয় হয়! অন্তত একটা মিথ্যার প্রতীষ্ঠা চাই! একটা রায় হোক- ফাঁসির রায়! বিনিময়ে হাজার অভিযোগ খালাস হয়ে যাক! তাবৎ মানবতা বিরোধী অপরাধীকে ঝুলিয়ে দিতে মাত্র একটা বলিরায় চাই! বাকী গুলো সত্যের কাছে পরাজিত হলে কিছুই আসে যায়না! বলি দিতে হলে দরকার শুধু একটা রায়, একটা মাত্র টান! এরপর... এরপর সত্য নিয়ে যারা হাজির হতে চায়, তাদের গুম করে আরেক পিশাচের দেশে পাঠিয়ে দাও। সময় নাই! তাড়াহুড়ো করে বলি দিতে থাক! আসামীর স্বাক্ষী কমাও, দিন কেটে দাও! বিচারপতি হয়ে যাও নিজেই আরেক তার্কিক! বিতর্ক করে দমিয়ে দাও বলিদেহের পক্ষশক্তি!
বিচারক! তুমি বিচলিত? পা কাঁপছে তোমার? বেলজিমায়ে অভিজ্ঞ জল্লাদের পরামর্শ নেয়ার পথ বৈধ আজ তোমার জন্যই! কী চাই? পদ-পদবি, মেয়েদেহ, নেশা, মোহ, গ্রীন কার্ড...? কী চাই? মনকে প্রবোধ দাও! এই অশুভ অর্চনা অসমাপ্ত রাখ, চলতে দাও! প্রয়োজনে গুলি হবে। মানুষ মরবে সারি সারি, তবুও, তবুও এই অর্চনা চলবেই। বলি দিয়ে ক্লান্ত হবে না! প্রমাণের অভাব বলে হাত কাঁপছে? লিখা থেমে গেছে? গলা শুকিয়ে যাচ্ছে... তো বল- আসামী নিজেই স্বীকার করে নিক 'অপরাধ'। এইদিনে অশরিরী প্রেতাত্মারা জেগে উঠছে যে! মরতে যাওয়া বলিদেহ বড্ড দামী! প্রেতাত্মা জাগে তো সেই দেহের বদলায়! ওদের জাগাতে তোমার থামা চলবে না। বলিদেহের জন্য ৪৯ অনুচ্ছেদ জুড়ে দেব। মিথ্যার শক্তিতে সকল অপরাধের স্বীকৃতি দেবে। ওরাই তোমার কলমের জোর হবে। এবার চালাও! লিখে দাও- পরবর্তী দেহবলির আদেশ...
...অবশেষে বলির নাটক একেরপর এক মঞ্চায়ন হয়।
বলি উৎসবের বিপরীতে দুফোঁটা জল ফেলে যারা মানবতার জানান দেয়, তাদের জন্যই আজকের খবর বেরিয়েছে-
"আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তুরিন আফরোজ বলেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নিরপেক্ষতা দেখানোর কোনো সুযোগ নেই। এটা যারা করছে তারা সুকৌশলে যুদ্ধাপরাধী ও মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। এদের প্রতিহত করা দরকার। তিনি বলেন, গণমাধ্যমকে বিশেষ করে সম্প্রচার মাধ্যমকে কেবল প্রতিষ্ঠানের টিআরপি বাড়ানোর জন্য নিরপেক্ষতা দেখাতে ওদের মতের কাউকে নিয়ে আসাটা গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি আরো বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের সাজা কার্যকরের পর তাদের দাফন, জানাজা নিয়ে বড় পরিসরে সংবাদ করা হচ্ছে। এতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে ভুল বার্তা যেতে পারে।"
অমানবিক অবস্থা আমাদের দেশে! এর শেষ হবে?
ReplyDeleteভাই আজব একটা দেশে বাস করছি আমরা
ReplyDeleteএই সরকার যাদেরকে আটক করে রেখেছে তারাই সবচেয়ে সৎ মানুষ আল্লাহ এদের বিচার করুন
ReplyDelete