শিরোনাম

Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks

Dec 10, 2015

মানবতা বিরোধী ট্রাইবুনালের সেই বিচারকদের মাধ্যমেই ফাঁসির রায়প্রাপ্ত এক শীর্ষখুনির মুক্তি!

সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, জাস্টনাউবিডি২৪

ন্তর্জাতিক ভাবে প্রবল সমালোচিত বাংলাদেশের আইসিটি ট্রাইবুনালে ঠুংকো অজুহাতে একের পর এক রাজনীতিবিদের ফাঁসির দন্ড কার্যকর করলেও অন্য একটি আদালতে ট্রাইবুনালের বিচারকদের দেখা গেল ভিন্ন চরিত্রে বিচারকদের একটি রায়ের ফলে বাংলাদেশের কালো তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ৯০ দশকের খুনি জোসেফের মুক্তির ক্ষেত্রে বড় কোন বাধা রইলো না ফলে দূর্বল সাক্ষ্যের ওপর ভিত্তি করে সরকারবিরোধী রাজনীতিকদের ওপর ক্রমাগত মৃত্যুদন্ড কার্যকরের মাঝেই দূর্ধর্ষ খুনির ফাসি মওকুফের প্রক্রিয়াটি গুঞ্জন তুলেছে সর্বোত্র

জানা যায়, '৯০ এর দশকে ঢাকায় ত্রাস সৃষ্টিকারী খুনি বাহিনীর প্রধান জোসেফ মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হয়েছিলেন। গতকালই সে রায়ের আপিল নিস্পত্তি হয় ফাঁসি মওকুফ জাবজ্জীবন দন্ড প্রদানের মাধ্যমে। অন্যদিকে বিচার চলাকালীন খুনি জোসেফের ২০ বছল কারাবাসকে জাবজ্জীবন দন্ডের অন্তর্ভুক্ত হিসেবে গ্রহণ করায় তার মুক্তিতে কার্যত বড় কোন বাঁধা আর থাকল না। গ্রেফতারের সময় জোসেফের বিরুদ্ধে খুন, চাঁদাবাজী, অস্ত্রবহন ইত্যাদি অভিযোগে মোট ১১ টি মামলা ছিলো। গতকালের নিস্পত্তি মামলার পর এখন মাত্র একটি মামলা অনিস্পত্তি অবস্থায় রয়েছে

কাকতালীয় ভাবেই এই ব্যাতীক্রম ঘটনার জন্ম দিলেন বাংলাদেশের আইসিটি ট্রাইবুনালের বিচারক প্যানেলে বসা বিচারকগণ। অন্যদিকে বিস্ময়কর ব্যাপার হল, মানবতাবিরোধী ট্রাইবুনালের আসামী পক্ষের প্রধান আইনজীবিকেই দেখা গেল জোসেফের পক্ষে প্রধান আইনজীবী হিসেবে। একজন আইনজীবীর পেশাগত কাজে এটি খুবই স্বাভাবিক একটি দৃশ্য হলেও কাকতালীয় বিষয়টি এখন বাংলাদেশে টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিনত হয়েছে। ইতিমধ্যে আইসিটি ট্রাইবুনালে বিচারাধীন রাজনীতিবিদদের পক্ষে নিরন্তর প্রচেষ্টা করে ক্রমাগত ব্যার্থ হওয়া এই প্রধান আইনজীবী ভিন্ন আদালতে এসে সেই বিচারিক প্যানেলের কাছ থেকেই নিজ মক্কেলের পক্ষে অভাবিত সফলতা লাভ করলেন। এর মধ্য দিয়ে একই সময়ে সম্পূর্ণ বিপরীত দুটি অভিজ্ঞতার সঞ্চয় হল প্রধান আইনজীবি হিসেবে থাকা সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবি সমিতির এই সভাপতির ভাগ্যে। যা সে দেশের বিচার অঙ্গনে এক তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা!

পর্যবেক্ষণ বলছে, আইসিটি মামলায় নিজ ক্লায়েন্টদের রক্ষায় শক্তিশালী আইনী অবস্থানের পরও অবধারিত ফাঁসির আশংকায়, সম্প্রতি বিচারক প্যানেলের নিকট এক অভূতপূর্ব নিবেদন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন এই আইনজীবি। সকল সাক্ষপ্রমাণ নিজ মক্কেলের পক্ষে থাকবার পরেও রায়ের ব্যাপারে চরম নিরাশাগ্রস্থ হতে দেখা গেছে অভিজ্ঞ এই আইনজীবিকে। ফলে আইনগত দিক থেকে নিজ মক্কেলদের খালাসে শক্ত অবস্থানের বিপরীতে দাঁড়িয়েই মিনতি করেছেন, যেন ধারাবাহিকতা অনুসারে শাস্তি বহাল রাখলেও অন্তত বিচারাধীন ব্যাক্তির বয়স এবং ভালো আচরনের মত বিষয়গুলো বিবেচনা করে আদালত তার মক্কেলকে মৃত্যুদন্ডের মত গুরুদন্ড না দেন!
যদিও ট্রাইবুনাল ইতিমধ্যে স্পষ্ট করেছে যে বিচাধাধীন আইসিটি মামলার আইন সম্পূর্ণই আলাদা একটি বিষয়! এই আলাদা বিষয়ের ব্যাখ্যায় সরকারপক্ষ আইনজীবীরা বলছেন 'জন আকাঙ্ক্ষার' বিষয়টি। বাংলাদেশের 'জন আকাঙ্ক্ষা'র কথা বলেই আইসিটি আদালতের ফাঁসির রায় গুলোর ব্যাপক ভিত্তিক প্রচারও করা হচ্ছে সে দেশের মিডিয়াগুলোতে। আদালত বলছেন, আইসিটি ট্রাইবুনালের আওতায় দন্ড প্রদানের জন্য যুদ্ধ সময়কালীন হত্যা কিংবা অন্যান্য অপরাধে সরাসরি যুক্ত হবার প্রমাণও দরকার নেই। এক্ষেত্রে পাকিস্তানের অখন্ডতায় রাজনৈতিক পক্ষশক্তি হিসেবে তাদের নেতৃত্বের অবস্থানই দন্ড প্রদানের মূল ভিত্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে


কাকতালীয় ভাবে এই মতাবলম্বী বিচারকদের সামনেই আর্জি নিয়ে কাল দাঁড়িয়েছিলেন, সেই একই আইনজীবি নেতা! যাকে কদিন আগেও আদালতে দাঁড়িয়ে ভিন্ন মাত্রায় দন্ডমওকুফ আবেদন করে সমালোচিত হতে হয়েছে তার ভাষায়- সেসময় তার কথার 'বিভ্রান্তিকর ব্যাখ্যা' করে মিডিয়া মাতিয়েছিলেন সরকার পক্ষের আইনজীবিরা। নতুন করে মিডিয়াকে স্বাক্ষাৎকার দিয়ে সেটা জানাতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। সেই ভিন্নমাত্রিক আবেদনই যেন 'বিভ্রান্তি সৃষ্টি' করেই কার্যকর হল একজন প্রমাণিত খুনির পক্ষে

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুনি জোসেফের পারিবারিক পরিচিতি সুভকর নয়। বিমান বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ওয়াদুদ আহমেদের ছোট ছেলে তোফায়েল আহমেদ জোসেফের বড় ভাই হারিস আহমেদের নামও রয়েছে পুলিশের শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকায়। হারিস বর্তমানে ভারতে পালিয়ে আছেন বলে ধারণা করা হয়। নব্বইয়ের দশকে সন্ত্রাসীদের গুলীতে নিহত হন তাদের আরেক ভাই সাঈদ আহমেদ টিপু। আর তোফায়েল আহমেদ জোসেফ ছাত্রলীগ করতেন। 

যদিও তার বড় ভাই আজিজ আহমেদ বর্তমান বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের প্রধান এবং তিনি সরকারের হুকুমে বর্ডার গার্ডকে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীন এলাকা গুলোতে মোতায়েন করে সরকার বিরোধী আন্দোলন দমন করতে অন্যতম প্রধান ভূমিকা রেখেছেন। একপর্যায়ে সীমান্ত রক্ষাকারী বিজিবি প্রকাশ্য জনতার ওপর নির্বিচার গুলি বর্ষনের ঘটনা ঘটায়। ঐসব জনতা মূলত চলমান আইসিটি ট্রাইবুনালের বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ বিক্ষোভের আয়োজন করেছিলো। ফলত এরা ওইসব মানুষ ছিলেন, যারা আইসিটি ট্রাইবুনাল কর্তৃক বিবেচিত 'বিচারের মূলভিত্তি' তথা জনতার আকাঙ্ক্ষার দেশব্যাপী সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র তুলে ধরতেন। এমনকি আইসিটি আদালতের শুধু একটি রায়কে কেন্দ্র করে সেদেশে একদিনে ২৭০ জন সাধারন মানুষকে গুলি করে হত্যা করার ঘটনায় জড়িত হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশসহ অন্যান্য সসস্ত্র বাহিনী!

উল্লেখ্য, ১৯৭১ এর মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আইসিটি ট্রাইবুনাল সেদেশের মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারে করছে। বর্তমান বিচারাধীন ব্যাক্তিরা সবাই সেদেশের সরকার বিরোধী প্রভাবশালী নেতা। সেক্ষেত্রে রাজনীতিক হিসেবে প্রত্যেকেই শক্তিশালী জনপ্রতিনিধি এবং সেদেশে তাদের ব্যাপক জনসমর্থন লক্ষ্য করা গেছে

জাস্টনাউবিডি২৪

2 comments:

  1. সাবাস! বাংলাদেশ আগায় যাচ্ছে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ঠিক। ডিজিটাল বাংলাদেশ।

      Delete