শিরোনাম

Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks

Dec 4, 2015

উদীময়ান ইউরোপীয় মুসলিম শক্তিকে শাস্তি দিচ্ছে আইএস!

বিশ্লেষণ, জাস্টনাউবিডি২৪
(ফ্রান্সের একটি মসজিদে ফরাসী মুসলিম রমনীগণ নামাজ আদায় করছেন)

ফ্রান্সে চলমান জরুরি অবস্থার অধীনে ১৬০টির মতো মসজিদ বন্ধ করে দিচ্ছে দেশটির সরকার। বর্ণবাদী দৃষ্টিভঙ্গী প্রসারের অভিযোগে এসব মসজিদ বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রধান ইমামরা। চরমপন্থা প্রচারের অভিযোগে ইতোমধ্যে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ৩ টি মসজিদ। বন্ধের প্রক্রিয়ায় থাকা মসজিদ গুলোর একজন ইমাম জানাচ্ছিলেন, সর্বমোট ১০০-১৬০ মসজিদ বন্ধ করার ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে তাদের জানানো হয়েছে। এই প্রথম কোন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দেশটিতে ব্যবস্থা নিতে দেখা গেল। 'প্যারিস হামলার পর সে দেশের মুসলিমরা নজিরবিহীন সমস্যায় নিপতিত হবেন', চলমান ঘটনাগুলোই সে আশংকার বহিপ্রকাশ। (আলজাজিরা, ইনকিলাব)

ঘটনার রাতেই প্যারেসে অবস্থিত বৃহত্তম উদবাস্তু শিবিরে অগ্নিসংযোগ করে স্থানীয় মানুষেরা। তারা একে প্যারিস হামলার তাৎক্ষনিক জবাব হিসেবে বিবেচনা করেছে। জানা যায়, বৃহৎ এই উদবাস্তু শিবিরটি বিশেষত সিরিয়া হতে আসা উদবাস্তুরা মাথা গোঁজার ঠাই করেছিলেন। সাথে ছিলেন বিপুল সংখ্যক আফ্রিকান মুসলিম উদবাস্তু।

অন্যদিকে প্যারিস হামলার পর গোটা ইউরোপ জুড়ে প্রধানত মসজিদ গুলো প্রতিশোধ হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিনত হয়। প্যারিস হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত ইউরোপ জুড়ে অনেক গুলো মসজিদে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর এবং হুমকি প্রদানের মত ঘটনা ঘটেছে। একটি মসজিদের দেয়ালে আইফেল টাওয়ারের ছবি অংকন করে শীতল হুমকির ঘটনা ঘটেছে। প্যারিস হামলার জেরে ক্ষতিগ্রস্থ ইউরোপীয় মসজিদগুলোর মাঝে পর্তুগালের বাঙ্গালী অধ্যুষিত একটি এলাকার 'বাংলা মসজিদও' রয়েছে, যাতে গত মাসে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে।


(লন্ডনের পাতাল ষ্টেশনে ঘরফেরত মুসলিম নারীকে ধাক্কা দেয়ার মুহুর্ত)

ইউরোপ জুড়ে ঘনীভূত হওয়া এই বিপদের মাত্রা সবচেয়ে স্পষ্ট হয়ে চিত্রিত হয় সম্ভবত লন্ডনের বেকারলু লাইন প্লাটফর্মের ঘটনায়। বিপুল পরিমান যাত্রীদের ভীড়ে আন্ডারগ্রাউন্ড ট্রেন ষ্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ঘর ফেরত ঐ মুসলিম মহিলা। তার ঠিক পেছন থেকে তাকে সজোরে ঘুষি চালাবার পর ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া হয় টিউব ট্রেনের সামনে। সিসিটিভির ফুটেজ আলোকে কার্যত একটি ট্রেন দৃশ্যপটে আসার পর ঠান্ডা মাথায় ট্রেনের সামনে একজন ঘর ফেরত নারীকে ফেলে দেয়ার ঘটনাটি শিউরে তুলেছে গোটা ইউরোপীয় মুসলিম জনগোষ্ঠীকে। ঐ মুসলিম নারী সৌভাগ্যক্রমে আহত হবার পরও প্রাণে বেঁচে যান এবং অপরাধী ব্যাক্তিকে সনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার সিসিটিভি ভিডিও


(ইউরোপ জুড়ে উদীয় মুসলিম সভ্যতার প্রভাবশালী নিদর্শন হল ফুটবল ক্লাবগুলোর বিখ্যাত মুসলিম সদস্যরা,
এঁদের দেখাদেখি মাটিতে কপাল ঠেকিয়ে সেজদার মাধ্যমে গোল উদযাপনের ধারা ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে একটি ফ্যাশনে পরিনত হয়েছে,
যার প্রেক্ষিতে ইউরোপের কট্টরপন্থী ক্লাবগুলো গোল করার পর সেজদা উদযাপনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে)

উল্লেখ্য ফ্রান্সে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর ৭.৫ ভাগই মুসলিম। গোটা ইউরোপে এটিই দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা। ইউরোপের প্রধান হালাল খাদ্য জোগানদাতা দেশ ফ্রান্স।
এদিকে প্যারিস হামলার জেরে প্রতিশোধ মূলক হামলার আঘাত ছড়িয়েছে সিরিয়ান উদবাস্তু থেকে মূল ভূখন্ড সিরিয়া অবধি। 'চরম প্রতিশোধের' আগুনে মত্ত ফরাসী প্রেসিডেন্ট ঘটনার পরই সিরিয়ায় নির্বিচার হামলা শুরু করেন। স্টেডিয়াম ও বাজারগুলোর পাশাপাশি সে হামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় সাধারন হাসপাতালও। সেখানে সিরিয়ান সম্বলহারা আহতরা চিকিৎসাধীন ছিলেন।

অন্যদিকে প্যারিস হামলার পর চলমান 'দায়েশ' চরমপন্থার ব্যাপারে প্রভাবশালী ইসলামী আলেমদের বক্তব্য এসেছে। তাঁরা এইসব চরমপন্থী গ্রুপ গুলোকে 'মূলত মুসলিম জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ইজরাইলের ষড়যন্ত্র' হিসেবে চিহ্নিত করছেন। পাশাপাশি এইসব গ্রুপের কার্যক্রমকে 'ইসলাম পরিপন্থী' হিসেবে বর্ননা করছেন তারা। সম্প্রতি জুলিয়ান্স এসাঞ্জ এর বিখ্যাত ইউকিলিকস একটি গোপন নথি ফাঁস করে দেয়। আমেরিকার ওই গোপন নথিটি বলছে, চরমপন্থী গ্রুপ আইএস (দায়েশ) এর পেছনে মূল ভূমিকায় রয়েছে আমেরিকা। যদিও উইকিলিকসের বহু আগে মধ্যপ্রাচ্যের মুক্তিকামী জিহাদী গ্রুপ হামাস আইএসকে সরাসরি ইজরাইলের সৃষ্টি হিসেবে বর্ণনা করেছিলো। 'দেশে দেশে উদীয়মান গণতান্ত্রিক ইসলামী দলগুলোকে বিতর্কিত করতে আইএসের জন্ম দিয়েছে পশ্চিমারা' এমন তথ্য আইএসের আত্মপ্রকাশের সময়কালে প্রকাশ করে হামাস।

সম্প্রতি বছরগুলোতে ইউরোপের উগ্রডানপন্থী খ্রিষ্টান গ্রুপগুলো সেখানকার উদীয়মান শক্তি মুসলমানদের 'ইউরোপ থেকে বের করে দেয়া' এবং তাদের স্বার্থগত প্রতিষ্ঠানগুলোতে 'হামলাকে' তাদের 'অধিকার' হিসেবে বর্ননা করে আসছিল। একে তারা 'নতুন ক্রুসেড' হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে এবং বেশ প্রভাবশালী হয়েই গড়ে ওঠে ক্রুসেডীয় গ্রুপগুলো। যার বিরুদ্ধে ইউরোপ জুড়ে একটি মধ্যপন্থী আন্দোলনও জোরদার হয়েছিল। মূলত এ পাল্টা আন্দোলনের মাঝেই মুসলিমদের পাশে এসে দাঁড়ায় প্রচুর স্বতস্ফূর্ত অমুসলিম ইউরোপিয়ান। যা উগ্রখ্রিষ্ট গোষ্ঠিটির কার্যসিদ্ধির পথে মূল বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়।


(উদীয়মান শক্তি মুসলিমদের বিরুদ্ধে উগ্র থিয়েরি চারলিয়া গ্রুপের র‍্যালী)

(উদীয়মান মুসলিম সভ্যতা ঠেকাতে জার্মানীতে মুসলিম বিরোধী সমাবেশের একটি দৃশ্য)

(ইউরোপে মুসলিম সভ্যতার বিকাশ রুখতে উগ্র পেগিডা গ্রুপের তৎপরতা)

বিপুল নওমুসলিম সৃষ্টি পাশাপাশি বেশ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আধুনিক দাওয়াতী তৎপরতায় গোটা ইউরোপেই অব্যাহত নিরব অভ্যুত্থান করে যাচ্ছিলেন ইউরোপীয় মুসলিমগণ। মূলত এরই পরিনতিতে ইউরোপে মুসলিম সভ্যতার পূণরাবির্ভাবের আশংকায় ভীত হয়ে পড়েছিলেন স্থানীয় খৃষ্টান উগ্রবাদীরা। ফলাফল স্বরুপ সম্প্রতি বছর গুলোতেই নজীরবিহীন মুসলিম বিরোধী বেশ কিছু বিক্ষোভ এবং বিপরীতে বিশাল কিছু পাল্টা বিক্ষোভেরও দেখা মেলে গোটা ইউরোপ জুড়ে।

এ ধরনের পরিস্থিতিতে জাতীয় ভাবে মুসলিমদের কোণঠাসা করার ক্ষেত্রে উগ্রপন্থীদের জন্য 'প্যারিস হামলার' মত একটি সুযোগের প্রয়োজন ছিলো। আইএসের দায় স্বীকার এবং সেই রাতেই সিরিয়ান উদবাস্তু শিবিরে হামলার মধ্য দিয়ে উগ্রখ্রিষ্ঠান গ্রুপগুলোর সকল চাওয়া পাওয়া যেন পূর্ণতা পেল। এজন্য ইউরোপিয়ানদের জনপ্রিয় ফুটবল স্টেডিয়াম দারুন একটি লক্ষ্যস্থল।

(মুসলিমদের সমর্থনে পাল্টা সমাবেশের একাংশ)

(মুসলিমদের পক্ষে ইউরোপে একটি বিশাল র‍্যালী)


-জাস্টনাউবিডি২৪

(জাস্টনাউবিডি২৪; সৃজনশীল মিডিয়া অঙ্গন প্রতিষ্ঠায় প্রতীজ্ঞাবদ্ধ। জাস্টনাউবিডি২৪ এর কোন সংবাদ, লেখা, প্রবন্ধ, বিশ্লেষণ পূর্ণ কিংবা আংশিক আকারে অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সুস্পষ্ট নৈতিকতা বিরোধী ও কপিরাইট অধিকার লঙ্ঘন। জাস্টনাউবিডি২৪ আশা করে বাংলা মিডিয়া জগতে একটি সুন্দর ভবিষ্যত গড়ার পথে সহযোগী মিডিয়াগুলো সত্যিকার সহযোগীর ভূমিকা পালন করবেন।)

2 comments:

  1. I seee!!!!!

    Nice Realization!

    ReplyDelete
  2. আল্লাহু আকবার! এই জঙ্গিরা ইহুদিদের চক্র।

    ReplyDelete