শিরোনাম

Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks

Dec 12, 2015

ভারত থেকে হুমকিঃ শাস্তি হবে বাংলাদেশের!

সংবাদ বিশ্লেষণ
জাস্টনাউবিডি২৪

বারও নতুন করে বাংলাদেশের পাটশিল্পে নজর ভারতের!

পাটশিল্পে ভারতীয় আগ্রাসন পরবর্তী বহু বছর মৃতপ্রায় অবস্থায় থেকে, সম্প্রতী বাংলাদেশের পাটশিল্প কোন মতে দাঁড়াতে শুরু করেছে। তখনই অতীতের ভয়ংকর পাট ইতিহাস যেন আবারও হুংকার দিচ্ছে!

হুমকি-ধামকি আসছে ভারত থেকে!

ভারতীয় পানি আগ্রাসন এবং আবহাওয়ার কারনে এবার পাট উৎপাদন ব্যাপক ভাবে কমে যাওয়ায় বাংলাদেশ সরকার দেশীয় পাটমিলগুলো রক্ষার স্বার্থে গত ৩ নভেম্বর ১ মাসের জন্য কাঁচাপাট রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। 

এরপর ২ ডিসেম্বর দেশের আভ্যন্তরীন পন্য পরিবহনে পাটজাত মোড়ক নিশ্চিত করতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কাঁচাপাট রপ্তানি বন্ধ করার ঘোষণা দেয়া হয়। 

পাটের উৎপাদন চরম ভাবে ব্যাহত হওয়ায় বাংলাদেশের পাটকল গুলো রক্ষা করা দায় হয়ে পড়েছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের পাটকল রক্ষার স্বার্থে সরকারের এই উদ্যোগ বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশের পাটের ওপর নির্ভরশীল কলকাতা ভিত্তিক কলগুলোকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে হাপিত্তেস। বরাবরের দাদাসুলভ দেন-দরবার ছাড়িয়ে এবার রীতিমত ভারতীয় ব্যবসায়ী মহলের হুংকার আসছে ওপাশ থেকে!

ইতিমধ্যে নয়াদিল্লিতে বৈঠক বসিয়ে ইন্ডিয়ার বস্ত্রমন্ত্রী সেদেশের বানিজ্যমন্ত্রীকে বাংলাদেশের নিষেধাজ্ঞা উঠাতে অনুরোধ করেছেন।

সে সাথে তুলে এনেছেন, কাঁচা পাটের অভাবে ভারতের ২০ ভাগ পাটকল বন্ধের খবরও!

বিষয়টি আগামী ১৫ তারিখ পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা ও ইন্ডিয়ান প্রধানমন্ত্রী মোদি বরাবর তুলে ধরার কথাও উঠছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ রপ্তানি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে, এ নিয়ে তাঁদের বক্তব্য নেই। এদেশের পাটশিল্পের উত্থানপতনে কাগজে-কলমে দাদাদের কিছু আসে যায়না। যদিও বাস্তবিক অর্থে সেটা মিথ্যাচার বৈকি।

প্রয়োজনে আবারও পাট নিয়ে গঙ্গা, তিস্তা, সীমান্ত, সংস্কৃতি আগ্রাসনের মত হাজার দৃষ্টান্ত চাপাবার কোন বালাই নেই তাঁদের। প্রশ্নটি যেন, বাংলাদেশ আবার কী হে?



পাটের ইতিহাস কী বলে?
একসময় বাংলাদেশে পাটকে বলা হত সোনালী আঁশ। প্লাস্টিক ও পলিথিনের প্রচলন তখনও হয়নি। বিশ্বজুড়ে তাই ব্যাগ হিসেবে সেসময় পাটের চাহিদা তুঙ্গে!

বৈদেশিক মূদ্রার সবচেয়ে আকর্ষণীয় মাধ্যম ছিলো বাংলাদেশের পাটশীল্প।

বিশ্ববাজারে বাংলাদেশ উৎপাদিত পাটের গুণমানের সাথে পাল্লা দিতে না পেরে আকর্ষণীয় এ শীল্পটি হাতিয়ে নেয়ার অশুভ দৃষ্টি এসে পড়ে সরাসরি বাংলাদেশের পাটকল গুলোতে।

ফলে মরনকামড় বসায় বন্ধুরাষ্ট্রের আজীবন বেনিফিসারী পার্শ্ববর্তী ভারত। 

হঠাত পাটকল গুলোতে রাতের আঁধারে আগুন ধরানো শুরু হয়! রাতারাতি ধ্বসে পড়ে সোনালী আয়ের পাট। এদেশের পাটকলগুলো যখন একে একে পড়ে যাচ্ছিলো; ইতিহাসবিদগণ লিখেন, অন্যপৃঠায় কলকাতায় দাঁড়াচ্ছিলো একের পর এক নয়া পাটকল!

এভাবেই একটি বিপুল শিল্প রাতারাতি বাংলাদেশ থেকে কলকাতায়!স্থানান্তরিত হল।

তবুও কি থামে? পাট নিয়ে কৃষিপর্যায়ে বিপর্যয় নামাতে একের পর এক অব্যাহত বাজার কারাসাজির অবর্ণনীয় পরিনতিতে দেশের পাটচাষীরা ভুলেই গেল এককালের সোনালী আশের সুদিনের কথা! 

নিজ স্বার্থে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সোনালী ধারায় আগুন ধরাতে যে বিদেশী গোয়েন্দা বিভাগ কাজ করেছিলো। সেই র এখন দেশের প্রতিটা জনপদে মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী হিসেবে ছড়িয়ে থাকার লাইসেন্স ব্যবহার করছে!

বাংলাদেশী পাটশিল্পে শ্যেণদৃষ্টির অতীত অধ্যায়ের পর এবার পাট রপ্তানি শুরু না হলে বাংলাদেশেরকে শাস্তি দেয়ার দাবি উঠিয়েছেন ভারতীয় পাটশিল্প পতিরা।

ভারতীয় 'দ্য হিন্দু' পত্রিকার রিপোর্ট মতে, ভারতের শিল্পপতি ঘনশ্যাম সারদা দাবি করেছেন, 'বাংলাদেশ যেমন নিজেদের শিল্পকে বাঁচাতে কাঁচাপাট রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে, পাটের বস্তা রপ্তানি করতে চায়, তেমনি ভারতেরও উচিৎ ওদেশ থেকে পাটের বস্তা আমদানি নিষিদ্ধ করে দেয়া। 'অন্তত এরকম ব্যবস্থা তো করাই যা, যে পরিমান কাঁচা পাট আসবে সে পরিমান পাটের বস্তা ঢুকতে দেয়া হবে' যোগ করেন তিনি।



বানিজ্য হিসাব কী বলে?
দুদেশের বরাবর বানিজ্য বিনিময় হিসাব করে, এ ধরনের হাস্যকর শাস্তির বিধানে, ভারতীয় বানিজ্য কতটুকু লাভবান হবে আর কতটুকু ক্ষতিগ্রস্থ হবে সেদিকে অবশ্য এবার হিসেবের কলম চালালনি ইন্ডিয়ান পাটশিল্প সংশ্লিষ্টরা।

কথায় কথায় বাংলাদেশের প্রতি বায়বীয় 'উপকারের' খোটা দিতে স্বিদ্ধসত ভারতের সাথে বিশাল বানিজ্য ঘাটতি রয়েছে বাংলাদেশের।

অর্থাৎ, ভারত বাংলাদেশে যে ব্যবসা করে তার তুলনায় বাংলাদেশ ভারতে গিয়ে ব্যবসা করার অনুমতি পায়না।

ফলে সৃষ্টি হওয়া বিপুল এ বানিজ্য ঘাটতির পরিমান হয়েছে ১৭৮৪ মিলিয়ন ইউরো বা ১৫৩০৯-কোটি টাকা!

স্বল্প বানিজ্যের মাধ্যমে ভারত থেকে বাংলাদেশে আনা টাকার পরিমান বিয়োগ করলে এই পরিমান টাকা বেরিয়ে আসে। যা বানিজ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে নিয়ে যায় ইন্ডিয়া।

অথচ কিনা তথ্য বলছে, এটা খুবই সীমিত হিসাব। যা বৈধ বানিজ্যের খাতিরে প্রকাশ হয় মাত্র। এর বাইরে বাংলাদেশে বিশাল অংকের অবৈধ পণ্য পাচার করে ভারত।

এই অবৈধ ও বৈধ পথে ভারতীয় আয়ের সুযোগে বাংলাদেশ পরিনত হয়েছে পশ্চিমা দেশগুলোর পর সেদেশের জন্য সবচেয়ে বড় বানিজ্য কেন্দ্রে!

অর্থাৎ বাংলাদেশ ভারতের জন্য অবধারিত বিপুল বাজার। যেখানে তারা ব্যবসা করে, বিনিময়ে বন্ধুত্বের একতরফা অধিকার খাটিয়ে বাংলাদেশের জন্য বিশাল বানিজ্য ঘাটতি তৈরি করে দেয়।

তাছাড়া মোট বৈদেশিক মূদ্রা বা রেমিটেন্স অর্জনের হিসেবে ভারতীয় বৈদেশিক রেমিটেন্সের ৫ম বৃহত্তম জোগানদাতা দেশ হল বাংলাদেশ। এদেশে অবৈধ ও বৈধ উপায়ে লাখ লাখ ভারতীয় অবস্থান করছে। এরা এদেশে কাজ করে তাঁদের দেশে রেমিটেন্স পাঠায়।




হিসেব শুধু বানিজ্যই নয়!
কথায় কথায় খোটা দেয়া ভারত কোনদিন বানিজ্য, রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, আইন কোন দিক থেকেই বাংলাদেশের বাস্তবিক বন্ধু নয়। তবুও একমূখী আনুষ্ঠানিকতার সময় কাগজে কলমে তারা বাংলাদেশের অকৃত্রিম এক 'বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র'।

যেমন বর্তমান পাট নিয়ে অযাচিত বিতর্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ইন্ডিয়ান জুট মিলস এসোসিয়েশন বলছে, 
'বন্ধুপ্রতীম এ দুটি প্রতিবেশি দেশ, যারা সার্কের সদস্যও, তাঁদের মধ্যে বানিজ্যিক স্বার্থে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে।' (দ্য হিন্দুর রিপোর্ট)

ব্যাক্তিগত স্বার্থকে শুধু পারস্পরিক স্বার্থ হিসেবে চালিয়েই খ্যান্ত নয়! সাথে সেই সম্পর্কের ভিত্তি হিসেবে বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র, প্রতিবেশী রাষ্ট্র, সার্কভুক্ত রাষ্ট্রের যাবতীয় ভিত্তি টানতে কিনা, কেবল আভ্যন্তরীন শিল্প বাঁচাবার স্বার্থে হলেও, বাংলাদেশের পক্ষে নামমাত্র বৈধপথের কাঁচাপাট রপ্তানি বন্ধ করাই যথেষ্ট!

বন্ধুত্ব নয়ঃ কার্যত দাতাদেশ হয়েও ইন্ডিয়ার গোলাম সেজে থাকার শুভপরিনতিটুকু দেখেনি বাংলাদেশ!
অন্যদিকে সকল স্বার্থগত প্রশ্নের উর্ধে থাকা আন্তর্জাতিক সকল নদীসীমায় একতরফা বাঁধ দেয়ার অপরাধ, সীমান্ত হত্যার মত নৈমিত্তিক জঘন্যতা, অন্যদেশের মুক্তিযুদ্ধকে নিজেদের যুদ্ধ বলে চালিয়ে দেয়ার সাংস্কৃতিক আগ্রাসন, যুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারকে ব্ল্যাকমেইল করে নিজেদের আগ্রাসন চুক্তিতে বাধ্য করা, নিজ দেশের একচ্ছত্র স্বার্থে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীন রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করে  বাংলাদেশকে করিডরে পরিনত করার মত ঘৃণীত ব্যাপারগুলো বীনা বাক্য ব্যয়ে সংঘটিত হয়ে যায়!

প্রতিবেশি রাষ্ট্রের বোঝা বইতে আর বন্ধুত্বের ঋণ শোধ করতে গিয়ে বাংলাদেশ ওদের নিকট নমশুদ্র হয়ে থাকবে। এটা কখনোই যুক্তযুক্ত কথা নয়।

তিস্তা নদীর মত আন্তর্জাতিক নদীহত্যা করার সময় নির্লজ্জতা করা হয় ভারতের আভ্যন্তরীন রাজনীতির নামে।

মমতা এসে বাংলাদেশকে বন্ধুত্বের বিশ্বাস ও আস্থার কথা পড়ে দিয়ে যায়।

অন্যদিকে পানির অভাবে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীন কৃষিজ পন্যের বিপর্যয় নিয়ে সার্ক পর্যন্ত সম্পর্কের সালিশী রাজনীতির নোংরামোপনা!

এটা বড় ভাগ্যবান প্রতিবেশীর পরমপ্রাপ্তি বটে।

রাজনৈতিক সচেতনতা ছাড়া ইন্ডিয়ার আগ্রাসন বন্ধের পথে আর কোন সমাধান যে নাই, তাই উপলব্ধি করছেন বাংলাদেশের সচেতন ব্যাক্তিবর্গ।

তারা বিশ্বাস করছেন যে, বাংলাদেশের সোনালী যুগ ফিরিয়ে আনতে অবশ্যই সোনালী শিল্প নিয়ে বাংলাদেশের অতীত সোনালী শিক্ষার আলোকে প্রতিবেশিদের সাথে 'সোনালী বানিজ্য পরিকল্পনাই' করতে হবে।

সেক্ষেত্রে সকল হিসাবের খাতা খুলে উন্মুক্ত বৈঠক হতেই পারে।

জাস্টনাউবিডি২৪

(জাস্টনাউবিডি২৪ একটি স্বাধীন সুন্দর বাংলাদেশ গঠনে অঙ্গীকারাবদ্ধ। জাস্টনাউবিডি২৪ এর যেকোন লেখা, বিশ্লেষণ, সংবাদ অনুমতিহীন আংশিক বা পূর্ণ নকল করে প্রকাশ চূড়ান্ত অনৈতিকতার শামিল; কপিরাট পরিপন্থীও বটে। বাংলাদেশের নিজস্বতা রক্ষায় সুন্দর আগামী বিনির্মানে সহযোগী মিডিয়াগুলো থেকে সত্যিকার সহযোগী ভূমিকা আশা করে জাস্টনাউবিডি২৪।)

3 comments:

  1. আমাদের দেশটাকে এরা চুষে শেষ করে দিচ্ছে। আমাদের ওপরেই উল্টা আবার ভাব দেখায়।

    ReplyDelete
  2. vai amra hoilam dukhi desher nagorik.

    ReplyDelete
  3. এইসব আর ভালো লাগেনা!

    ReplyDelete