শিরোনাম

Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks

Dec 11, 2015

আইএস ও ইহুদি স্টেটের যোগসূত্রঃ বাংলাদেশও নিরাপদ নয়??

জাস্টনাউবিডি২৪ বিশ্লেষণ,


কেরপর এক আইএস-ইজরাইল সম্পৃক্ততার তথ্য বের হয়ে আসছে! আফগান,ইরাক, লিবিয়ার মত মুসলিম দেশের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীর পাশাপাশি তালেবান-আলকায়দা যেসব এলাকায় একের পর এক পশ্চিমা আকাশ আগ্রাসনের মুখে পাহাড়ী পাথুরে পরিবেশে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে, না খেয়ে কোন মতে নিজেদের অস্তিত্ব ধরে রাখছিল। সেসব এলাকায় হঠাৎ সুবিশাল বহর নিয়ে আধুনিক অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত আইএস বেরিয়ে এসে বিশ্বব্যাপী তুমুল হৈ চৈ ফেলে দেয়। এরপর অপ্রতিরোধ্য গতিতে এদের মাধ্যমে সিরিয়া-ইরাকের বিপুল এলাকা পতন ঘটতে থাকে। সময়ের ব্যবধানে একের পর এক নারকীয় তান্ডবলীলা আধুনিক হলিউডি স্টাইলে রেকর্ড করে অত্যাধুনিক ভিডিও ফরমেটে ইন্টারনেট মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ছেড়ে দেয় আইএস!


ফলশ্রুতিতে ইসলামী মানবিক কল্যান রাষ্ট্রের চিরায়ত ধারনা থেকে আস্তে আস্তে সরে গিয়ে ইসলামী রাষ্ট্রের নামে আইএসের ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করে গোটা বিশ্ব! এদের কার্যকলাপের পথ ধরে নতুন করে আবারও বিশ্বব্যাপী ইহুদি ও ইসলাম বিদ্বেষী সকল শক্তিগুলো চাঙ্গা হয়ে উঠতে দেখা যায়। একদিকে মুসলিমদের ওপর ব্যাপক মাত্রার নির্যাতন শুরু হয় গোটা বিশ্বব্যাপী অন্যদিকে আইএসের কান্ড দেখিয়ে ইসলামকে বিতর্কিত করা হতে থাকে পত্রিকা, মিডিয়া এবং বিতর্কের স্টেজগুলোতে। ফলে পশ্চিমা দেশগুলোতে বিশেষ করে নওমুসলিম জনগন এবং ইসলামের দিকে আগ্রগামী মানুষেরা ব্যাপক ভাবে বিভ্রান্ত হতে থাকেন।

উগ্রবাদী মুসলিম বিদ্বেষীদের হাতে জন্মগত মুসলিমদের পাশাপাশি নওমুসলিমদের ওপরও নির্যাতন বেড়ে যায় শুধুই আইএসের দৃষ্টান্ত পেশ করে। দেশে দেশে এই যখন অবস্থা। তখন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর নির্বাচনী বৈতরনী পার হবার শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবেও যুক্ত হল মুসলিম বিদ্বেষী প্রচারনা। সম্প্রতি ফ্রান্সে উদীয়মান মুসলিম সভ্যতাকে কার্যকর ভাবে দমিয়ে দেয়া হয়েছে প্যারিস হামলার পর। স্থানীয় উগ্রবাদীরা এই প্রথম কোন বাঁধা ছাড়াই মুসলিম বিদ্বেষী প্রচারনার সুযোগ পেয়েছে। এর আগে ইউরোপ জুড়ে মুসলিম বিদ্বেষী দল গুলো যখনই মাঠে নেমেছে তখনই প্রতিরোধ হিসেবে রাস্তায় নেমে এসেছেন স্থানীয় বিপুল সংখ্যক মধ্যপন্থী অমুসলিমরা। ফলে ভেস্তে গেছে তাঁদের মুসলিম বিদ্বেষী কান্ডগুলো।

এবার বাস্তবতা ভিন্ন! প্যারিস হামলা সত্যিই স্থানীয় মানুষকে মুসলিম বিদ্বেষীদের প্রতীরোধের ক্ষেত্রে শক্তিশালী বাস্তব দৃষ্টান্ত পেশ করবার আর সুযোগ রাখছেনা। বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে প্রকাশ পায়, আইএস হামলার পরই স্থানীয় জনতার মাঝে উগ্রপন্থীদের দলে যুক্ত হবার প্রবনতা বেড়েছে অনেক গুন। ঐ প্রতিবেদনেই  বলছিলেন একজন স্থানীয় খ্রিষ্টান- 'আমি কখনও ভাবতে পারতাম না আমি কোন উগ্রদলে যুক্ত হব, কিন্তু প্যারিস হামলা এবং অব্যাহত আরব উদবাস্তুর আগমন আমার মনে ইসলাম সম্পর্কে ভয় ধরিয়ে দিয়েছে। আমিও এখন উগ্রবাদী দলে নাম লিখাব।'


আইএস কান্ডের ফলাফলও মুসলিম বিরোধী! ফ্রান্সের উগ্রপন্থী ঐ রাজনীতিক দলকে নাড়ামাথার দল বলে মানুষ ভর্তসনা করত। এর আগে তারা কোন ভাবেই সভ্য সমাজে প্রবেশ করতে পারেনি । অথচ সম্প্রতি স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনেই ফ্রান্সজুড়ে তারা ক্ষমতা পেয়ে গেছে! পর্যবেক্ষনে বেরিয়ে এসেছে, মূলত ইউরোপ জুড়ে উদীয়মান মুসলিম সভ্যতা যেভাবে দ্রুত উত্থান করছিল, তার বিপরীতে উগ্রডানপন্থী দলগুলো কার্যকর প্রতিরোধে সক্ষম না হতে পারায় ঘটেছে আইএসের প্যারিস হামলা। আর সে পথ ধরেই এবারই প্রথমবারের মত ইউরোপ জুড়ে প্রতিবাদহীন অবস্থায় মুসলিম নির্যাতনের পরিবেশ তৈরি হল। ফলে ইসলাম বিদ্বেষ ছড়াবার পথে সাহায্যকারী এই ইসলামভীতিই সেখানকার মুসলিমদের বিরুদ্ধে কার্যকর ভাবে ব্যবহৃত হবে।

এমন অবস্থাতেই প্রভাবশালী ডেইলি মেইলের এক বার্তায় বেরিয়ে আসল নতুন আরেক তথ্য। তাদের এক সচিত্র সংবাদে দেখা যাচ্ছে একজন আত্মঘাতী আইএস জঙ্গিনেতার সাথে ইজরাইল পরিচালিত হাসপাতালে এসে নেতানিয়াহু করমর্দন করেছেন। শুধু তাই নয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২০০০ (দুই হাজার) তথাকথিত 'ইসলামী যোদ্ধার' প্রাণ বাচিয়েছে ইসলায়েলী সৈন্যরা! এতে তাদের মোট ব্যয় হয়েছে ৫ কোটি ইসলায়েলী মুদ্রা। যা ১ কোটি ৪০ লাখ ডলারের সমপরিমান! চিকিৎসা ও উদ্ধার ব্যয়ের চেয়ে গুরুতর প্রশ্ন হল, সিরিয়ায় ইজরাইলী সেনাবাহিনী নিয়মিত রাতের আধারে গোপন অভিজান চালিয়ে মিজেদের জীবনে ভয়াবহ রিস্ক নিয়েও 'ইসলাম পন্থী যোদ্ধাদের' উদ্ধার অভিজান চালায় কেন? আর তাদেরই নিয়ে যাওয়া হয় ইজরাইল পরিচালিত হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিরিয়ার গোলানে ইজরাইল পরিচালিত ঐ হাসপাতাল সফর করেই ইজরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু আত্মঘাতী আইএস স্কোয়াডের ঐ চিকিৎসাধীন নেতার সাথে হ্যান্ডশেক করেন।

এ ব্যাপারে ইজরাইল দাবি করছে, তারা শুধু মাত্র বাশার বিরোধী বাহিনীকে সাহায্য ও চিকিৎসা দেয়। কিন্তু ইজরাইল বিরোধী সমালোচকরা জানাচ্ছেন 'আইএসের সহায়তা দিচ্ছে ইজরাইল'। শুধু তাই নয় এ অঞ্চলে ইজরাইলের গোয়েন্দা বাহিনী মোসাদ আইএসের জন্মদাতা ও প্রশিক্ষকের ভূমিকায় রয়েছে। তারপরও ইজরাইলের বক্তব্য ধরে নিয়ে, আরেকটি পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছেন ইজরাইল বিরোধী সমালোচগন। তাঁদের প্রশ্ন হল, যদি আইএস না হয়ে বাশার বিরোধীদেরকেই ইজরাইল সাপোর্ট দিয়ে থাকে, তাহলে আরো গুরুতর প্রশ্ন সামনে আসে! ইজরাইল খুব ভালো করে জানে বাশার বিরোধী যোদ্ধারা ইজরাইলের জন্য সরাসরি হুমকি। তারা ইজরাইলকে মানে না। ইজরাইলের অস্তিত্বও মানেনা। সেক্ষেত্রে তাদেরকে ইজরাইল পরিচালিত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া কিংবা বিপজ্জনক ভাবে রাতের আঁধারে ইজরাইলী সৈন্য দিয়ে উদ্ধার করার পাশাপাশি এই সব বিপুল খরচ ইজরাইল করবে কোন স্বার্থে? আর সেইসব ইসলামী যোদ্ধারাই ইজরাইলের সমর্থন নেবেন কোন যুক্তিতে? এসব সাহায্য ও রাত্রি অভিজানের গোপন ভিডিও চিত্রও হস্তগত করেছে ডেইলি মেইল।

এদিকে, আইএস-ইজরাইল সম্পৃক্ততার খবর নতুন নয়। একেবারে শুরু থেকেই আইএসকে পশিমাদের সৃষ্টি বলে ঘোষনা দেয় ফিলিস্তিনে নিয়জিত ইজরাইল বিরোধী শক্তিশালী জিহাদী ফ্রন্ট হামাস। হামাসের বক্তব্য হল, মূলত দেশে দেশে ইসলামপন্থীদের উদীয়মান প্রভাব খর্ব করতেই বিতর্কিত আইএস সৃষ্টি করা হয়েছে। ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোকে বিতর্কিত করাই জিহাদের অপব্যাখ্যাকারী  এই গোষ্ঠীর উদ্দেশ্য। হামাসের দ্বিতীয় প্রধান নেতা মুসা আবু মারজুক মিশরীয় দৈনিক আল শুরুকের সাথে স্বাক্ষাতকারে এ তথ্য জানান। এছাড়া আইএসকে বাতিল বলে মনে করে অন্য গোষ্ঠী- তালেবান ও আলকায়দা। ইতিমধ্যে আইএসের রহস্যজনক উত্থানের পর এই দুই দলের মাঝে একাধিক ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ফাস হয়ে যাওয়া তথ্যে, আইএসের প্রধান বোগদাদীর ইহুদি বংশোদ্ভূত হওয়া এবং আমেরিকার সিনেটর জন ম্যাককেইনের সাথে তার মিটিং এর ছবিগুলো আলোড়ন তুলেছে বিশ্বব্যাপী। যা নিয়ে সহযোগী দৈনিক যুগান্তরে ১৮ নভেম্বর সংখ্যায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিশ্লেষণ এসেছে।


সবগুলো এভিডেন্স সামনে রেখে আইএসের তৎপরতার ফলাফল নিয়ে পর্যালোচনায় বসলে একে সম্পূর্ণই ইজরাইলী স্বার্থে পরিচালিত ভয়াবহ গোষ্ঠী হিসেবেই দেখা যায়। মরুভূমির পাহাড়ী ধুলা এবং সদ্য পালিয়ে থাকা তালেবান এলাকাগুলো থেকে জাকজমক ভাবে আইএসের রহস্যময় উত্থান, পশ্চিমা অস্ত্রসস্ত্রের বিপুল সমাহার এবং অর্থের বাহুল্য যেমন গুরুতর প্রশ্নের জন্ম দেয়। আবার ইজরাইলের নিদারুন সম্পৃক্ততা সে প্রশ্নকেই যেন উত্তর হিসেবে গ্রহণ করতে বাধ্য করে পর্যালোচকদের। অন্যদিকে ইজরাইলের সাথে সবচেয়ে বেশি কাছাকাছি থেকে যুদ্ধরত হামাসের পর্যবেক্ষন আইএসের ইজরাইল সম্পৃক্ততার ব্যপারে নিশ্চয়তা প্রদান করে। পাশাপাশি পশ্চিমা নথিপত্র ফাঁসকারী বিখ্যাত উইকিলিকসও হামাসের সমর্থক গোপন নথি ফাস করে সে পথেই যুক্ত হওয়ায় আইএস নিয়ে আর কোন সন্দেহের অবকাশ থাকেনা। সম্প্রতি ইউলিকস আমেরিকান এ নথি ফাস করে। যেখানে আইএসের জন্মদানে আমেরিকার সরাসরি সম্পৃক্ততার বর্ননা রয়েছে।

পাশাপাশি, আইএসের কান্ড গুলোর ফলাফল নিয়ে পর্যালচনায় দেখা যায়, আইএসের সকল কর্মকান্ডের ফলাফল লাভ করেছে ইসলাম বিরোধী উগ্রশক্তি এবং বিশেষত ইজরাইল। মধ্যপ্রাচ্যের শিয়া-সুন্নি দন্দ্বের সরাসরি ফল লাভ করতে যাচ্ছে ইজরাইল। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বিপুল এলাকা ইজরাইলভুক্ত করার চিরন্তন মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের পথে এলাকাগুলোকে যুদ্ধের নামে মানবশূন্য করতে কার্যকর ভূমিকাটি রাখছে এই আইএস। আবার সুদূর ইউরোপে গিয়েও ইউরোপের মুসলিম স্বার্থবিরোধী দীর্ঘমেয়াদী কাজ করে দিয়ে আসছে এই আইএস। পাশাপাশি হামাস বর্নিত ইসলাম রাজনীতির বিতর্কিত করার কর্মকান্ডে সহায়তা দিচ্ছে আইএসের অমানবিক কান্ডগুলো। ফলে বিভিন্ন বিশ্বব্যাপী মুসলিম প্রধান এলাকা গুলোতে ইতিমধ্যে প্রভাবশালী ইসলামপন্থী দলগুলোকে বিতর্কিত করার বিরোধী পথ উন্মুক্ত হয়েছে।

কপিরাইট- জাস্টনাউবিডি২৪


আইএসের প্যারিস হামলার প্রেক্ষাপট এবং ইউরোপীয় মুসলিম সভ্যতার ধ্বংস বিষয়ে পড়ুন-
উদীময়ান ইউরোপীয় মুসলিম শক্তিকে শাস্তি দিচ্ছে আইএস!

4 comments:

  1. আমাদেরকে খুবই সাবধান থাকতে হবে। যেন এরা বাংলাদেশে ঘাটি গাড়তে না পারে। লেখাটির জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাদেরকে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. এসব তথ্য ইদানিং অনেক বেশি প্রকাশ হচ্ছে। যুগান্তরের লেখাটাও পড়েছিলাম।

      Delete
  2. এইসব তথ্য প্রকাশ হলেও কোন লাভ নাই। কিছু বেয়াক্কল সব ধর্মেই আছে। ইসলামেও ঐসব গর্ধবই এইসব কাজে লেগে থাকবে।

    ReplyDelete
  3. onek kicu jante parlam!!!

    ReplyDelete