শিরোনাম

Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks

Dec 7, 2015

'গরুভক্ত ভৃত্যের কাজ কারবার'

কল্পনা মুখার্জীর বোধকল্প,
জাস্টনাউবিডি২৪

সীমান্ত পাহারাদার বাহিনীর প্রধান যখন গরু পাচারের সাথে সকল সীমান্ত হত্যার সংযোগ ঘটিয়ে, সীমান্ত ছেড়ে দেশের অভ্যন্তরে মোতায়েন হবার রাজনৈতিক দ্বায়িত্ব দেখিয়ে দেন, তখন সশস্ত্র এ নেতার পেছনে রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয়ের বৈধ কোন কারন থাকতে পারেনা। দ্বায়িত্ব গ্রহণের ৩ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে গতকাল (৬ ডিসেম্বর ২০১৫) রাজধানীতে অবস্থিত বিজিবি হেডকোয়ার্টার পিলখায় সংবাদ সম্মেলন করে এ নেতা বললেন, 'গরু পাচার বন্ধ হলেই সীমান্ত হত্যাও বন্ধ হবে'। খোদ বাংলাদেশী সীমান্তরক্ষী প্রধান 'পশু লেনদেনের দামে' যখন সীমান্তের নিয়মিত গণহত্যার বৈধতা মূল্যায়ন করেন, তখন তাকে আরএসএস এর বাংলাদেশী মুখপাত্র হিসেবেও দেখা যায়। দ্বায়িত্বের পাইকারী বাজারে ঢুকে এই যখন তার অবস্থান, তখন কেবল রাজনৈতিক নেতা, আরএসএস মুখপাত্রতেই সীমাবদ্ধ থাকবেন কেন? সাথে সাম্রাজ্যবাদী ইন্ডিয়ান দূতালীও করে দিলেন পোষাকী এই সীমান্ত দারোয়ান।

দালালীর তো সীমা থাকে, তিন তিনটা বৎসর একটা বাহিনীর প্রধান থাকার আহ্লাদী অতিসহ্যে দালালীর মাত্রাও ছাড়িয়ে গেল এদিন।

বিচ্ছিন্নতাবাদী বার্মিজ বংশোদ্ভূত সন্ত্রাসী শান্তিবাহিনীকে ইন্ডিয়ার মাটিতে যুগের পর যুগ আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়ার বিনিময়েই কিনা, মুক্তিযুদ্ধের বেনিফিশারী আওয়ামী সরকারের সিক্রেট শক্তি, অসমীয় মুক্তিযোদ্ধা নেতাকে রাতের আঁধারে ছিনতাই কার্যে ভারতীয় বাহিনীর সহযোগী হয়! এমন কান্ড যে, ঘটনার রাত পার হয়ে দুপুর গড়ালেও সংশ্লিষ্ট দেশের খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকও জানতে পারেনা!



ইন্ডিয়ান আনন্দ বাজার প্রকাশিত খবরের সূত্র ধরে এগোলে, খোদ বাংলাদেশের স্বার্বভৌমত্ব হাইজাক হবার প্রমাণ মেলে! সেই খবরের ফ্লেভার বলে দিচ্ছে, অসমীয় মুক্তিযোদ্ধা নেতাকে ভারতে হাইজ্যাক করার খবর খোদ বাংলাদেশেরও জানা উচিৎ নয়! সেখানে চুনো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোন ছাড়? তাঁদের রিপোর্ট হল, মুক্তিযোদ্ধাদের ('তৎকালীন পাকিস্তানের ভাষায় ৭১ এর সন্ত্রাসবাদীদের') আশ্রয় দাতা ইন্ডিয়ার ইন্টেলিজেন্স ফোর্স (তাঁদের ভাষায় 'আজকের অসমীয় সন্ত্রাসী সংগঠনের') এই নেতাকে তুলে নিয়ে গেছে কমান্ডো স্টাইলে! কালো এসইউভি গাড়ি গভীর রাতে কাসিমপূর কারাগারে ঢুকে ছোঁ মেরে উলফা নেতাকে তুলে নিয়ে সোজা ঢাকাস্থ দাদা দূতাবাসের আশ্রয় তলায় চলে যায়। সে ঘটনার নিখুঁত বর্ননা যেন সেখানে! এরপর কোন কোন কর্তার কানে সেই খবর পৌছে গেল, কেউ জানলো না! সেই মাইক্রো নির্দ্বিধায় বাংলাদেশ মাড়িয়ে ভারতের মাটিতে চলে যাবার ক্লিয়ারেন্স পেয়ে গেল! সীমান্তরক্ষীর প্রতিরোধ ছাড়াই বাইরোড চলেও গেল, রাতের শান্ত পরিবেশেই!!

বলিউডি প্রযোজনায় বিনা টিকিটেই বেশ সিনেমাটিক থ্রিলার ছিলো ১৯৭১ এ 'স্বাধীনতা' পাওয়া বাংলাদেশের মাটিতে! যেদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রেফ বলিউড নায়ক দেখতেই মাটিতে আসন পাতেন, সেদেশে আন্তর্জাতিক মানের প্রযোজনা! ভাবা যায়?

গতজকাল যে পিলখানায় বসে বিজিবি প্রধান সংবাদ সম্মেলনটি করলেন, সেই পিলখানাতেই ৬ বৎসর আগে (২০০৯ সালের ২৫ তারিখ) তার গায়ের পোষাক পরিবর্তনের ঘটনাও প্রথম প্রকাশ পায় ইন্ডিয়ার মিডিয়ায়! তারপর বাংলাদেশী মিডিয়াগুলো দাদাবাবুদের বরাতে সংবাদ প্রকাশ করতে শুরু করে! সে কী স্বাধীনতার স্বাদ! সে স্বাধীনতারই তো চুলচেরা ঋণশোধ চলছে! বিজিবি প্রধানও কাল সেই কৃতজ্ঞ জালেই বন্দী হলেন! ফলে, কে বলে 'ইন্ডিয়ান দূতিয়ালী'? নিন্দুকের নিন্দায় কান না দিলেও হয়।


কী ছিলো সেই কৃতজ্ঞতা?
ফিরে যাই এ বছরেরই ১৪ অক্টোবর তারিখে। প্রথম আলো পত্রিকার খবর"...গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার ইসলামপুরের নতুন বাজার এলাকা থেকে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর নাম রেনিন সু ওরফে রেনেজু রাখাইন। তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন ও অবৈধ অনুপ্রবেশ আইনে রাজস্থলী থানায় দুটি মামলা রয়েছে। আজ বুধবার সকালে রাঙামাটির পুলিশ সুপার (এসপি) সাঈদ তারিকুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, গোপন খবরের ভিত্তিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও পুলিশের যৌথ দল অভিযান চালিয়ে রেনিন সুকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর কাছে আরাকান আর্মির কাগজপত্র পাওয়া গেছে। তবে কোনো অস্ত্রশস্ত্র পাওয়া যায়নি।" -শুধু প্রথম আলো নয়। ঐদিন প্রকাশিত প্রতিটি পত্রিকায় এসেছে এই রানিন সোয়েকে ইসলামপূরের নির্মানাধীন একটি মসজিদের দোতলা থেকে আত্মগোপন অবস্থায় আটকের খবর। সে ছবিও পত্রিকাগুলোতে প্রকাশ পায়।
ও হ্যাঁ! উল্লেখ্য, এই ইসলামপূর কোন ভাবেই ভারতীয় এলাকা নয়। এটি 'স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশের' এক দশমাংশ অঞ্চল তথা পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত।

অথচ এই বিজয়ের ডিসেম্বরে এসে খবরে বলছে,
সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি প্রধান দাবী করে বসেন, বার্মার বিচ্ছিন্নতাবাদী আরাকান আর্মির রাজনৈতিক প্রধান রানিন সোয়েকে ইন্ডিয়ান সীমান্ত বাহিনী আটক করে বিজিবির হাতে তুলে দেয়। এরপর তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে বাংলাদেশের জেলে বন্দী করে! -এই অর্জনকে বিশাল প্রাপ্তি হিসেবে এর দ্বারা 'বার্মার আস্থা অর্জন' এর উল্লেখ করলেন বিজিবি প্রধান!





বেশ ভালো। পার্শ্ববর্তী দুই দেশের মুক্তিযোদ্ধাদেরকে এবার সামরাজ্যবাদীদের হাতে তুলে দিয়ে বার্মার আস্থা, ইন্ডিয়ার আস্থা...! আস্থায় আস্থায় উনারা আস্থান্বিত হতেই পারেন। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে আজ কোন সামরাজ্যবাদীর আস্থায় বন্ধক রেখে চলছেন, তার জবাবটা কে দেবে? শেষাবধি এসে মুক্তিযুদ্ধের 'সন্ত্রাসবাদী' নামও বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হল! মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচয় সন্ত্রাসী হয়ে গেলেও ঠিক ঠিক সাম্রাজ্যবাদের খেলোয়াড়- পার্বত্য চট্টগ্রামের ভিনদেশী জনগোষ্ঠীর সন্ত্রাসীপনা মুক্তিসংগ্রাম হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত হল। বহিরাগত বার্মিজ শান্তিবাহিনী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেই আজ বাংলাদেশের শান্তিচুক্তির অংশ! অন্যদিকে ভূমিপুত্র মুক্তিসংগ্রামী নেতা আরাকানীজ রেনিন সোয়ে ও অসমীয় অনুপ চেটিয়ারা সন্ত্রাসী!? বাহ!! কে বলে আওয়ামীলীগ 'মুক্তিযোদ্ধাদের' দল নয়?

তাই যদি না হবে,
তবে- কোন বন্ধকী সম্পর্কের ভিত্তিতে ইন্ডিয়ান আস্থা ধরে রাখার স্বার্থে বাংলাদেশের বন্দীকে হাইজাক করা কালো গাড়ী ডাকাতরাজ্যে যাবার ভিসা পেল?

কোন বন্ধকী সম্পর্ক, পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদে আশ্রয়-প্রশ্রয় দাতা ইন্ডিয়ারই আস্থা ধরে রাখতে বাংলাদেশকে নিশ্চুপ রাখে?

কোন সে বন্ধকী সম্পর্কের কারনে, বিজিবিকে গুলি করে পঁচা লাশ ফেরত দেয়ার ক্ষণ পার না হতেই বিজিবি নায়েককে ধরে হাতকড়া পরিয়ে ছ্যাচড়া লুঙ্গিচোরা সাজানো সামরাজ্যাবাদী বার্মার, আস্থা ধরে রাখতে সরকারকে বাধ্য করে?- যারা ঐতিহাসিক স্বাধীন আরাকান দখল করে আজ আরাকান মুক্তিযোদ্ধা রেনিন সোয়েদের জন্ম হতে বাধ্য করেছে!?

কোন সেই বন্ধকী সম্পর্ক, ইন্ডিয়ান সামরাজ্যবাদের ব্যাপারে যা টু শব্দ পর্যন্ত হতে দেয়না?

কোন লেন্দুপ দর্জীরা ইন্ডিয়ান পানি আগ্রাষন, সীমান্ত আগ্রাষণ, সাংস্কৃতিক আগ্রাষণ, ভূমি আগ্রাষনের ব্যাপারে ধারাবাহিক মৌনতা অবলম্বন করে 'বন্ধুত্ব' রক্ষা করে?

কোন বন্ধকী সম্পর্কের ভিত্তিতে ইন্ডিয়ার প্রশিক্ষিত ডাকাত সর্দার সন্তু লারমা বাংলাদেশে আজীবন উপমন্ত্রী বনে যায়?

১৯৭১ এ সহায়তার টিকিটে যে ফকিরনি সামরাজ্যবাদ বাংলাদেশে ঢুকে এদেশের পাবলিক টয়লেটের কমোড পর্যন্ত খুলে নিয়ে যায়, তাদের অপ্রাসঙ্গিক বন্দনার বিনিময়ে এ ক্ষমতা দখল মানুষের চোখ এড়িয়ে যায়না। সারাবিশ্ব জানে এই অনির্বাচিত অবৈধ সরকারের অধীন থাকা প্রতিটি গোলাম বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিক্রির একেকটা অবৈধ হকার। এই হকার গুলোরই একজন, বাংলার সীমান্তটাইগারদের ২০০৯ সালে হত্যার মাধ্যমে অর্জিত সীমান্তদারোয়ানীর দ্বায়িত্বও ছেড়ে দিয়েছেন। বাংলাদেশের রাজপথ গুলোকে কাশ্মীরী পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেয়ার কাজ করে যাচ্ছেন।


অনুপ চেটিয়া একজন মুক্তিকামী নেতা। বৃটিশদের দখলকৃত, অখন্ড আসামের স্বাধীনতা আন্দোলনে নির্ভিক মুক্তিযোদ্ধা দলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক তিনি। আবহমান বাংলার সাথে আসামের বন্ধুত্ব ঐতিহাসিক। সেই বন্ধুত্বের ঠিকাদার সেজে বসা, ৭১ এর বেনিফিশারী, সামরাজ্যবাদের এজেন্ট- অবৈধ সরকারের কাছ থেকে এ মুক্তিযোদ্ধাদের তুলে নিয়ে গেছে ইন্ডিয়া! সেই কালো রাতের কাহিনী অন্ধকারে রাখার অশুভ তৎপরতায়, সেভেন মার্ডারের ছ্যাঁচড়া খুনির বন্দিবিনিময় নামের ভ্রষ্টনাট্য উপস্থাপনার পর নতুন করে এই আজিজীয় নাটক সংযুক্ত হল। 

মূলত মুক্তিযুদ্ধ ব্যবসায়ী আওয়ামী সরকার মুক্তিযুদ্ধের নামে অবৈধভাবে অনন্তকালীন ক্ষমতা লাভের পথ রচনা করেছে। সেই পথ ধরেই আঞ্চলিক সাম্রাজ্যবাদী দুই দেশের হাতে দুই মুক্তিসংগ্রামী নেতাকে তুলে দেয়ার পাপাচারে লিপ্ত হয়েছে।
আরাকানি মুক্তিসংগ্রামী রানিন সোয়ে বাংলাদেশে গ্রেফতার হন। আসামের মুক্তিসংগ্রামী অনুপ চেটিয়া বাংলাদেশ থেকে হাইজ্যাক হন। সেভেন মার্ডারের নূর মোহাম্মাদকে দালাল সরকারের ইমেজ রক্ষায় সেসময় ইন্ডিয়া হস্তান্তর করেনি। এখন সকল তদন্ত শেষ করে নূর হোসেনকে দেশে এনে রিমান্ডে না নিয়ে সন্ত্রাসের গড ফাদার শামীম ও গডমাদার হাসিনাকে রক্ষা করা হল। অবৈধ ক্ষমতা লাভ ও জীবন রক্ষায় তথাকথিত বঙ্গবন্ধুর কন্যা এখন সামরাজ্যবাদের দালালিতে লিপ্ত হয়ে শুধু ক্ষমতার বিনিময়ে পুরো বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রন বাইরের হাতে দিয়ে দিয়েছে।

অন্যদিকে, একের পর এক নাটকের আয়োজন করে এদেশে ৭১ এর 'মুক্তিযুদ্ধের' পূর্তি উৎসব সাজানো হচ্ছে!

নাটক দেখছে বাংলাদেশ, টিকিট বানিজ্য চলে যাচ্ছে দিল্লির হাতে!

আর এই লেনদেনের সীমান্তপথ সচল রাখছেন বিশিষ্ট দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত রাজনীতিবিদ, গরুভক্ত হিন্দুত্ববাদী আরএসএসের বাংলাদেশী মুখপাত্র ও সাম্রাজ্যবাদের বিশেষ দূত- এই ৩ বছর বয়সী প্রধান সীমান্তদারোয়ান।

জয় মুক্তিযুদ্ধ, জয় মুক্তিযোদ্ধা, জয় স্বাধীনতা।

3 comments:

  1. শালা এক দালাল।

    ReplyDelete
  2. দেশটা শকুনে খাইলো।

    ReplyDelete
  3. আমরা স্বাধীনতা হারাতে চাইনা। আমরা শান্তি মত বাঁচতে চাই। প্রয়োজনে আবার মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা রক্ষা করব।

    ReplyDelete